Saturday 31 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পল্লবীতে স্বামী-স্ত্রী হত্যার রহস্য উদঘাটন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২৫ ২১:২০ | আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ০১:৫০

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের পল্লবী এলাকায় দোলনা আক্তার-নাজমুল হাসান দম্পতিকে কুপিয়ে হত্যার খবর এরই মধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। হত্যার অভিযোগে নিহত দোলনার প্রেমিক গাউস মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই হত্যার পেছনে কী কারণ ছিল তা পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। এদিকে আসামি গাউস মিয়া আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া সারাবাংলাকে বলেন, পল্লবীতে দম্পতি হত্যার ঘটনায় দোষ স্বীকার করে গাউস মিয়া বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের কাছে তিনি ঘটনার পেছনের রহস্য খুলে বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

জবানবন্দির বরাত দিয়ে এডিসি বলেন, ‘গাউস মিয়ার বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি সৌদি প্রবাসী। অন্যদিকে দোলনা আক্তার ও নাজমুল ইসলামের বাড়ি বরগুনাতে। নাজমুল বরগুনাতে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আর দোলনা আক্তার একটি বেসরকারি এলএলএমে পড়ার সুবাদে ঢাকার পল্লবীতে একটি ভবনের পাঁচ তলায় সাবলেট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সেই সাবলেট বাসাতেই আসা যাওয়া করতেন নাজমুল ইসলাম। দুই বছর আগে দোলনার সঙ্গে নাজমুলের বিয়ে হয়।’

সৌদিতে থাকা অবস্থায় গাউস মিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় দোলনা আক্তারের। সে সময় দোলনা নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেছেন। গত জানুয়ারি মাসে গাউস মিয়া সৌদি থেকে দেশে আসেন। দোলনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন একাধিকবার। দেখা সাক্ষাত সহজ করার জন্য মিরপুর-১১ নম্বরেই গাউস মিয়া একটি বাসা ভাড়া করেন। সেখানেই গাউস মিয়া থাকতেন। এরপর নিয়মিত দোলনার সঙ্গে তার সাক্ষাত হতো। তিনি একদিনের জন্যও টের পাননি যে দোলনা বিবাহিত। এ ছাড়া দোলনাও কোনো দিন বিবাহের কথা বলেননি গাউস মিয়াকে।

বিজ্ঞাপন

গাউস মিয়া দোলনাকে বিবাহের কথা বললেই বলত, পড়াশুনা শেষ হলে তাকে বিয়ে করবে। এভাবেই সময় পার করছিলেন দোলনা অভিযোগ গাউস মিয়ার।

গাউস মিয়ার বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (২৮ মে) সকালে মিরপুর-১১ নম্বর এলাকার একটি সড়কে দোলনা-নাজমুলকে দেখতে পায় গাউস মিয়া। এরপর কিছু না বলে তাদের অনুসরণ করেন তিনি। একপর্যায়ে সেই সাবলেট বাসায় প্রবেশ করতে দেখেন গাউস মিয়া। এরপর আশপাশের লোকজন ও বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়াদের জিজ্ঞেস করার পর তিনি জানতে পারেন, দোলনা ও নাজমুল স্বামী-স্ত্রী। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। এরপর গাউস মিয়া তার সঙ্গে প্রতারণা করায় দোলনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশ জানায়, গাউস মিয়া আদালতে বলেছেন, তিনি দোলনাকে হত্যা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার স্বামী নাজমুল বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাকেও কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। এক সঙ্গে তাদের দেখে মাথা কাজ করছিল না। নিজের প্রেমিকরা আরেকজনের সঙ্গে দেখে ঠিক থাকতে পারিনি। তাই ওই মুহূর্তে কোপানো ছাড়া উপায় ছিল না বলে জবানবন্দি দিয়েছেন গাউস মিয়া।

এডিসি বলেন, ‘দোলনা-নাজমুল দম্পতির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামি এখন কারাগারে আছেন। খুব শিগগির এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।’

পুলিশ বলেন, ‘এ রকম সম্পর্ক করার আগে বা পরে সবকিছু খোঁজ খবর নেওয়া উচিত। জেনে শুনে বিপদে পা না দেওয়াই ভালো। আর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এ রকম পরিণতি ডেকে আনে সেটি অনেক ঘটনাই স্বাক্ষী হিসেবে রয়েছে। দোলনা সব লুকিয়ে সম্পর্ক করেছে আবার গাউস মিয়াও খোঁজ খবর রাখেননি। অন্যদিকে স্বামী নাজমুল স্ত্রীকে বাইরে রেখে নিশ্চিন্তে ছিলেন। তারও আরও বেশি টেক কেয়ার করার দরকার ছিল।’ সব মিলিয়ে এখান থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নেওয়ার আছে বলে মত দেন একাধিক পুলিশ সদস্য।

সারাবাংলা/ইউজে/এইচআই

খুন নিহত পল্লবী স্বামীসহ প্রেমিকাকে হত্যা হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর