ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুল তলায় বর্ষাউৎসব
২৯ জুন ২০১৮ ১০:২৩
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাবি: সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় অনুষদের বকুলতলায় বর্ষাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় শিল্পী শেখর মন্ডলের বর্ষার রাগ পরিবেশনের মধ্যদিয়ে বর্ষা উৎসব ১৪২৫ এর শুভ সূচনা হয়।
পরে উৎসবে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ফাহিম হোসেন চৌধুরী, ড. লিনা তাপসী খান, সুমন মজুমদার, অনিমা রায় ও মামুন জাহিদ খান। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যজন, নটরাজ, স্পন্দন, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস্, স্বপ্ন বিকাশ কেন্দ্র। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন- নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, মাশকুর-এ-সাত্তার কল্লোল। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন- সুর ও বিহার, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, বহ্নিশিখা, পঞ্চভাস্কর, সমস্বর ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। শিল্পীদের বর্ষার গান-কবিতা ও নৃত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুল তলায় বর্ষার এক আবহ তৈরি হয়।
পরে বর্ষকথনে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট’র সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, সম্মিলিতি সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার
অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘পানির অপর নাম জীবন। বর্ষা মৌসুম পানির সঞ্চরণের মাধ্যমে জীবনকে নতুনরুপে উজ্জীবীত করে। এ কারণে আমরা বর্ষাকে স্বাগত জানাই। সাংস্কৃতিক আবহ বর্ষার মতো এত কোনো ঋতু করে না। বর্ষাকে আবর্ত করে বাংলা সাহিত্যে এমনকি বিশ্ব সাহিত্যে যত গান-কবিতা এবং নৃত্য রচিত হয়েছে এত অন্য ঋতুগুলোকে নিয়ে সম্ভব হয়নি।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘বর্ষা ঋতু এক আনন্দঘন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমাদের মাঝে ধরা দেয়। কৃষি প্রধান দেশে বর্ষা না এলে ফসল-ফলাদি কিছুই থাকবে না। গ্রামে টিনের চালের বৃষ্টির শব্দে বর্ষার প্রকৃত আনন্দ অনুভূত হয়। কিন্তু শহরে বর্ষার প্রকৃত আনন্দ থাকে না। বর্ষাউৎসব আয়োজনের মাধ্যমে নগরে সেই আবহ তৈরি করার জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
সত্যেন শিল্প গোষ্ঠীর সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী বলেন, ‘বর্ষা বাঙালির আবেগের একটি ঋতু। এই আবেগে কালী দাস থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভেসেছেন। কিন্তু আজকের প্রজন্ম বর্ষার আবেগ পাচ্ছে না। কোচিংমুখী শিক্ষার কারণে তারা বুঝতে পারছে না কবে বর্ষা আসে,কবে শরৎ আসে, কবে বসন্ত আসে। আমরা চাই আজকের প্রজন্ম সেটা জানুক। সেই কারণে আমাদের এই উপস্থাপনা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে বেশি বেশি করে বকুল গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।
উৎসবে ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতিকীভাবে শিশুদের মাঝে বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
সারাবাংলা/কেকে/এমএইচ