Monday 02 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৈবিছা’র নেত্রীর ওপর হামলার ঘটনার পর নগরকান্দা থানার ওসি প্রত্যাহার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩১ মে ২০২৫ ২৩:১২ | আপডেট: ১ জুন ২০২৫ ১৮:০৯

ওসি মো. সফর আলী। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর: বৈষম্যবিরোধী সংগঠক বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর হামলার ঘটনার পর ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফর আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

শরিবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় তাকে নগরকান্দা থানা থেকে প্রত্যাহার করা ফরিদপুর পুলিশ লাইনস-এ সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম।

বৈশাখী ইসলাম বর্ষা নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া গ্রামের সাবু শেখের মেয়ে। তিনি জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক এবং সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

এর আগে শুক্রবার (৩০ মে) নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গি ইউনিয়নের ভবুকদিয়া এলাকায় রাস্তার ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম সচিব বৈশাখি। বৈশাখীর বোন দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া চৈতি ইসলাম স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করতেন ওই এলাকার বখাটে তরুণ শরীফ বেপারি (২১)। এ ঘটনায় গত শুক্রবার নগরকান্দা থানায় একটি অভিযোগ দেন বৈশাখী। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারপিট করে বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান তারা মোল্যা ও তার লোকজন। এই ঘটনায় উত্ত্যক্তকারী শরিফ বেপারিকে আটক করে পুলিশ। এ সময় উপস্থিত থাকা পুলিশের ওপর হামলা চালায় তারা। পুলিশের গাড়ির চাবি কেড়ে নেয় ও গাড়িচালক কনস্টেবল মো. হান্নানকে মারধর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে রাত ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষাকে (১৮) মারধরের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় বর্ষা বাদি হয়ে শনিবার সকালে নগরকান্দা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলায় দায়ের করে। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানা পুলিশ আরেকটি মামলা করেছেন। মামলাগুলো রুজু হয়েছে বলে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নগরকান্দা-সালথার ভারপ্রাপ্ত সার্কেল মো. আসিফ ইকবাল। এসব মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রাজনৈতিক দিক নিয়ে পালটাপালটি অভিযোগ উঠলেও দলমত নির্বিশেষে প্রকৃত হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন মারধরের শিকার নেত্রীসহ বৈষম্যবিরোধীর নেতারা।

স্থানীয়রা জানা যায়, হামলাকারী সেকেন কাজী ও সাগর কাজী পূর্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেনের সমর্থক ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান তারা মোল্যার সমর্থক পরিচয় দেন। এ ছাড়া বদিউজ্জামান তারা মোল্যাসহ বিএনপির নেতাদের ছবি সংবলিত বিভিন্ন ফেস্টুন দেখা যায় সাগর কাজীর ছবি।

এদিকে শনিবার দুপুরে বর্ষার বাড়িতে যান উপজেলা বিএনপির নেতারা। তখন বর্ষা তাদের বলেন, ‘হামলাকারীরা যে দলেরই হোক বিচার করতে হবে।’

সারাবাংলা/এইচআই

ওসি পত্যাহার ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর