ইরানের কাছে একটি পরমাণু চুক্তির জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তিনি তেহরান সফরকালে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি ‘যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির কিছু বিষয়’ তার কাছে উপস্থাপন করেছেন।
শনিবার (৩১ মে) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এর আগে, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে যে, ইরান উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
তবে চুক্তিটি এখনো স্পষ্ট নয়। আইএইএ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরানের হাতে ৬০ শতাংশ মাত্রার ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে। এটি পরমাণু অস্ত্রের জন্য দরকারি ৯০ শতাংশ মাত্রার কাছাকাছি।
তবে এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য দরকারি মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া আরও পরিশোধন করলে দশটি পরমাণু অস্ত্রের জন্য এটা যথেষ্ট। এর মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র নেই এমন দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ইরানেরই এই মাত্রার ইউরেনিয়াম আছে।
ওই রিপোর্টের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির আইএইএ বোর্ড অব গভর্নরসকে ইরান অস্ত্র বিস্তার রোধের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করলো কি না তা পর্যালোচনার জন্য চাপ দেওয়ার পথ তৈরি হয়েছে।
তবে ইরানের দাবি, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। দেশটি আইএইএর এই রিপোর্টকে ভিত্তিহীন অভিযোগ সম্বলিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ইরান বলছে, আইএইএ গভর্নরস মিটিংয়ে তেহরানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা হলে ইরান তার জবাবে পালটা ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিয়াভিট বলেছেন, ‘চুক্তিটি গ্রহণ করে নেওয়াই ইরানের জন্য সর্বোত্তম হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটা পরিষ্কার করেছেন যে, ইরান কখনোই পরমাণু বোমার অধিকারী হতে পারবে না।’
লিয়াভিট বলেন, ‘একটি বিস্তারিত ও গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে ইরানকে পাঠানো হয়েছে। নীতি, জাতীয় স্বার্থ ও ইরানের জনগণের অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পরমাণু সক্ষমতা সীমিত করতে চাচ্ছে।