চট্টগ্রাম ব্যুরো: অতি ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু এলাকায় খাল-নালা উপচে সড়ক থেকে পানি বসতঘরেও ঢুকে পড়েছে। জলাবদ্ধতার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এছাড়া যানবাহন চলাচলেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত থেকে চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। শুক্রবার দিনভর বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। শনিবার দিনে বৃষ্টি তেমন না হলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবার মুষলধারে শুরু হয়। রোববার (১ জুন) বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে মুষলধারে বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার চট্টগ্রামে মোট ১৯৪ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি আরও ২-১ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।
এ হিসেবে চট্টগ্রাম জুড়ে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর ফলে রোববার সকাল থেকে নগরীর কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, চকবাজারের কিছু অংশ, মনসুরাবাদ, মুরাদপুর, জিইসি মোড়, টেক্সটাইল গেট, ওয়াসা মোড়, আগ্রাবাদে কিছু অংশ এবং কৈবল্যধাম ইস্পাহানি সি গেট এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব এলাকায় সড়ক ও অলিগলিতে কোথাও কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমরসমান পানি হয়েছে।
জিইসি মোড়ের বাসিন্দা দেলোয়ারা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকালে এক কোমর পানি হয়েছে। এসময় বাসা থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। তবে পানি বেশিক্ষণ ছিল না।’
জলাবদ্ধতার কারণে চকবাজার থেকে কাতালগঞ্জ হয়ে মুরাদপুর, জিইসি মোড় থেকে ওয়াসা পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। বিশেষত সিএনজি চালিত অটোরিকশা, টেম্পু, রিকশা, ইজিবাইক চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
বেলা গড়াতেই বৃষ্টি কিছুটা কমে এলে পানি নেমে যায়। তখন পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়। কিন্তু দুপুরে আবারও মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে পানি জমতে থাকে নিম্নাঞ্চলে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা সারাবাংলাকে বলেন, ‘মনসুরাবাদ, টেক্সটাইল গেট এলাকায় কিছু পানি উঠেছিল। জিইসি মোড়ের পুরোটাতে পানি ওঠেনি। শুধুমাত্র ইউনুসকো সেন্টার থেকে ওয়াসার মোড়ের দিকে পানি উঠেছিল। সেটা থলি (নিচু) জায়গা, সেজন্য পানি জমেছিল। ওয়াসা থেকে আলমাসের দিকে রাস্তায় পানি জমেছিল। আমরা নালা পরিস্কার করে দেয়ার পর দ্রুত পানি নেমে গেছে। কাতালগঞ্জ, চকবাজারে পানি উঠেছে। সেখানে খালে কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে সেখানেও পানি আর উঠবে না।’