ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন চাইবে। এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা নেই। নির্বাচন চাওয়া কোনো অপরাধ নাকি?’
রোববার (১ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত‘অবিলম্বে বিচার–সংস্কার–নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করো’ শীর্ষক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘আপনারা প্রাথমিক ডেডলাইন বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুন। তো ডিসেম্বর কথাটা কে বলেছেন প্রথম? প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি কিন্তু ডিসেম্বর বিষয়টাকে সামনে এনেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেন এবং মনে করেন এই পুরো সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত জরুরি-তো এই নির্বাচনকে পুরো সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখবেন। এটাকে বিরোধের জায়গায় দেখার দৃষ্টিই তো হচ্ছে জনগণবিরোধী অবস্থান নেওয়া।’
সাকি বলেন, ‘নির্বাচন চাওয়াকে একটা অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। খোদ প্রধান উপদেষ্টা বললেন, ডিসেম্বরের থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো যদি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় এর মধ্যে অপরাধের কিছু নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজন না করা যায়, কেন যাচ্ছে না সেই ব্যাখ্যা সরকার দেবে। সরকার ব্যাখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে দিয়েছেন তা জানা, তবে আলোচনার মধ্যে বলেছেন। তারা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখনো কমফোর্টেবল ফিল করেন নাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন।’
নির্বাচন নিয়ে ভারতের এজেন্ডায় এমনটা প্রচার করা বিপজ্জনক মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন ‘নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন দরকার।ভারতের কোনো মিডিয়া কিংবা কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বাংলাদেশে নির্বাচন চাইলেন, আর এখানে নির্বাচনের দাবি করা ভারতের ইচ্ছা অনুযায়ী হচ্ছে বলে মনে করা, এ ধরনের প্রচার অত্যন্ত বিপজ্জনক।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ হাসিনা সরকার যে ফ্যাসিস্ট রোলার চালিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে দেশে ঐক্য গড়ে উঠেছে। সেখানে নির্বাচন ভারতের এজেন্ডা, এমন কথা বলে জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে ভারতের পারপাস সার্ভ করা হচ্ছে। এমন প্রচার ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করতে সাহায্য করবে।’
আওয়ামী সরকার পতনের পর গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যে আশা ছিল তা বাস্তবায়িত হয়নি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকারের কর্তব্য দূরত্ব ও অনাস্থা জিইয়ে রাখা নয়, তার সমাধান করা।’
এ সময় জাতীয় ঐক্য ফিরে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।