Tuesday 03 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা
বিএমইউ’র চিকিৎসকসহ ৩৪ জনকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ জুন ২০২৫ ২২:৪৯ | আপডেট: ২ জুন ২০২৫ ০৩:২৫

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র জনতার ওপর হামলা, বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকসহ ৩৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

শনিবার (৩১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি ৩৬টি সভায় চূড়ান্তভাবে এসব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে। কমিটির সদস্যরা ওই সময়ের ভিডিও ফুটেজ, নিরাপত্তা প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের জবানবন্দি এবং অভিযুক্তদের লিখিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, চাকরিচ্যুত শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার ধরনের অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে কেবিন ব্লকের সামনে একজন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ১৫ জন, ছাত্র-জনতার সঙ্গে মারামারিতে জড়িত ছিলেন প্রায় শতাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর ওই ঘটনার নেতৃত্বদান ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন ২৩ জন।

‘ক’ ক্যাটাগরিতে অভিযুক্ত ১৫ জন হলেন- প্যালিয়েটিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবু তোরাব মীম, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ রিয়াদ সিদ্দিকী, পরিচালক (হাসপাতাল) অফিসের পেইন্টার নিতীশ রায় ও মো. সাইফুল ইসলাম, এমএলএসএস মেহেদী কাজী, সহকারী ড্রেসার মো. শহিদুল ইসলাম, সুইপার সন্দীপ দাস, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী উজ্জ্বল মোল্ল্যা, পরিবহন শাখার ড্রাইভার সুজন বিশ্ব শর্মা, ওপিডি-১ এর এমএলএসএস ফকরুল ইসলাম জনি, ল্যাবরেটরি সার্ভিস সেন্টারের কাস্টমার কেয়ার অ্যাটেনডেন্ট রুবেল রানা, ওয়ার্ড মাস্টার অফিসের এমএলএসএস শাহাদাত, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স শবনম নূরানী, ওয়ার্ড মাস্টার অফিসের এমএলএসএস মো. আনোয়ার হোসেন এবং কার্ডিওলজি বিভাগের এমএলএসএস মো. মুন্না আহমেদ।

‘খ’ ক্যাটাগরিতে অভিযুক্ত ১৯ জন হলেন- ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারুক হোসেন, নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আহসান হাবিব, ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ, নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে, অনকোলজি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোহাম্মদ জাহান শামস্, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নূর-ই-এলাহী, অটোল্যারিংগোলজি- নাক কান গলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. হাসানুল হক, শিশু নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কে এম তারিকুল ইসলাম, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ কুমার সরকার, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল-মামুন, নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহনেওয়াজ বারী, কার্ডিওলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. অমল কুমার ঘোষ, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, এ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, জেনারেল সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাঈদুল হাসান, অর্থোপেডিক্স সার্জারি বিভাগের গবেষণা সহকারী/স্ব-বেতনে কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ তারিকুল মতিন, ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ওমর ফারুক এবং গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন।

তদন্ত কমিটি বলেছে, অভিযুক্তরা শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালাই লঙ্ঘন করেননি, বরং ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, শারীরিক নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার মতো ঘটনা বাংলাদেশ দণ্ডবিধির আওতাভুক্ত গুরুতর অপরাধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি স্বচ্ছভাবে কাজ করেছে। সিন্ডিকেট সভায় আমরা তদন্ত কমিটির সুপারিশ আলোচনা করেছি। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশাসনিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছি।’

সারাবাংলা/এমএইচ/পিটিএম

৩৪ জন চাকরিচ্যুতি চিকিৎসক টপ নিউজ বিএমইউ সিদ্ধান্ত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর