মেঘনায় ট্রলার ডুবি
পুলিশ সদস্য সাইফুলের খোঁজ না পাওয়ায় উৎকণ্ঠায় পরিবার

নোয়াখালী: জেলার দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ পুলিশ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম (৩০) এর খোঁজ না পাওয়ায় উৎকন্ঠায় পরিবার।

রোববার (১ জুন) সকালে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ সদস্য সাইফুলের খোঁজ না পওয়ায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার পরিবার। এদিকে ভাইকে না পাওয়ার শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন বড় বোন স্বপ্না।

এর আগে, গত শনিবার (৩১ মে) বিকালে ৩৯জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩৭ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও পুলিশ সদস্য মো. সাইফুল ইসলামসহ আরও দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার চরশাহী গ্রামের গোপাল বাড়ির মো. সিরাজুল ইসলাম ও রহিমা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। তিনি নোয়াখালী জেলার পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সাইফুল ২০১৬ সালে পুলিশে যোগ দেন। চাকুরীর জীবনে প্রায় তিন বছর ধরে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় তিনি কর্মরত ছিলেন।

নিখোঁজ সাইফুলের বোন জান্নাতুল ফেরদাউস স্বপ্না বলেন, ‘আমার ভাইকে না পেয়ে আমার বাবা-মা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। তার ঈদে বাড়ি আসার কথা ছিল। সে ঈদে সাত দিনের ছুটি পেয়েছে। সে কুমিল্লায় বদলি হয়েছে। কিন্তু ভাই আমার বাড়ি আসে নাই। এখনো কোনো খোঁজ রয়েছে। তার কোন খোঁজ এখনো পাচ্ছি না।’

ট্রলারে থাকা জাহাঙ্গীর মাঝি বলেন, ‘আমরা মালামাল নিয়ে সকালে নোয়াখালী থেকে ভাসানচর যাই। বিকালের দিকে আসার পথে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। তারপর ট্রলারে পানি ঢুকতে থাকে। হঠাৎ করে ট্রলারটি উলটে যায়। করিমবাজার এলাকা থেকে তিনটা ট্রলার গিয়ে মানুষদের উদ্ধার করে। তার মধ্যে গিয়াস উদ্দিন নামের একজনের মরদেহ ও হাসিনা খাতুন নামের রোহিঙ্গা নাগরিকের মরদেহ পাওয়া যায়। ৩৯ জনের মধ্যে সাইফুল ইসলামসহ ২ জন এখনো নিখোঁজ আছে।’

ভাসানচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা রোগী নিয়ে গত ২৭ মে ভাসানচর এসেছিলেন পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম। আবহাওয়া খারাপ থাকায় তারা ফিরে যেতে পারেননি। গতকাল আবার রোহিঙ্গা রোগী নিয়ে ফিরে যাওয়ার পথে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। ২৪ ঘণ্টা পার হলেও সাইফুল ইসলামের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।’

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘মেঘনায় প্রচণ্ড স্রোত এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। সাইফুল ইসলামের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে তার পোশাক ও আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। আমরা এখনো তার আশা ছাড়িনি।’