পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ৮টি বালু বোঝাই ট্রাক্টর, ৮টি শ্যালো ড্রেজার মেশিন এবং ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের পানি সরবরাহের প্লাস্টিক পাইপ জব্দ করেছে প্রশাসন ও যৌথ বাহিনী।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে দেবীগঞ্জ পৌরসভার ময়নামতির চর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের শিবচন্ডি এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে অংশ নেয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। জানা যায়, দেবীগঞ্জের করতোয়া নদীর ময়নামতির চর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইজারা বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল একটি চক্র। আগেও ইজারাদারকে সতর্ক করা হলেও তিনি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সোমবার (২ জুন) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৮টি বালু বোঝাই ট্রাক্টর জব্দ করা হয় এবং ইজারাদার সরকার ফরিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইনজামামুল আমীন প্রীমন, সেনা সদস্য ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বালু উত্তোলনের দায়ে ট্রাক্টর জব্দ করা হয়েছে, ইজারাদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও ইজারা বাতিলের সুপারিশ পাঠানো হবে।
অন্যদিকে, তেঁতুলিয়া উপজেলার শিবচন্ডি জয়গঞ্জ এলাকায় সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে রোববার (১ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহিন খসরুর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে ৮টি ড্রেজার শ্যালো মেশিন ও ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের পানি পরিবহনে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পাইপ জব্দ করা হয়।
অভিযান পরিচালনায় অংশ নেন বিজিবির ১৮ ব্যাটালিয়নের শুকানী ক্যাম্পের কমান্ডার কামরুজ্জামান, বিজিবি সদস্য, তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। অভিযানে মেইন পিলার ৭৩৯ এর ৪ নম্বর সাব-পিলারের দক্ষিণে শিবচন্ডি এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া যায়। জব্দ করা ২টি শ্যালো মেশিন ও পাইপ প্রশাসনের জিম্মায় নেওয়া হয়েছে এবং বাকি ৬টি স্থানীয় ইউপি সদস্য তৈয়বুর রহমান ও আইবুল ইসলামের হেফাজতে রাখা হয়েছে। অভিযানে জড়িত পাঁচজনের নাম পাওয়া গেলেও তারা উপস্থিত ছিলেন না।
তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া ইউএনও আফরোজ শাহিন খসরু। তিনি আরও জানান, এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।