পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে চাচাতো ভাই-বোনের প্রেম ও বিয়ে নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে থানায় আনার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। বর্তমানে সে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রোববার (১ জুন) বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্বজনদের বরাতে জানা যায়, কিশোরটি পঞ্চগড় পৌরসভার একটি মহল্লার বাসিন্দা এবং কিশোরীটি সদর উপজেলার একটি গ্রামের। উভয়েই এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। বুধবার (২৮ মে) তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর কিশোরীর বাবা পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২৯ মে) কিশোর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে জানায়, তারা বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। পরে রোববার দুপুরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং নারী-শিশু হেল্প ডেস্কের পৃথক দুটি কক্ষে রাখে। বাইরে দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতার আলোচনা চলছিল।
এই সময় হঠাৎ করে ওই কিশোর কক্ষের ভেতর থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে জানালার পর্দা ছিঁড়ে বৈদ্যুতিক ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ সদস্যরা জানালা দিয়ে বিষয়টি দেখে দ্রুত দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
কিশোরের বাবা বলেন, ‘মেয়েটির বাবা আমার মামাতো ভাই। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত জানতাম না। মেয়ের পরিবার আমাদের চেয়ে সচ্ছল, তাই হয়তো সম্পর্কটা সহজে মেনে নিতে পারেননি। থানায় সমঝোতার আলোচনা চলছিল, এমন সময় ছেলেটি এমন কাণ্ড করে বসে।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রেজওয়ান উল্লাহ বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় কিশোরটিকে হাসপাতালে আনা হয়। গলায় ফাঁসের চেষ্টার পর তার শরীরে বড় কোনো ইনজুরি পাওয়া যায়নি। মানসিকভাবে সে ভেঙে পড়েছিল, আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ হিল জামান বলেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের পুলিশি পাহারায় নারী-শিশু হেল্প ডেস্কের পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছিল। হঠাৎ করে কিশোর আত্মহত্যার চেষ্টা করলে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুইপক্ষই তাদের জিম্মায় নিতে চাচ্ছে। কেউ অভিযোগ না করায় স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।’