ঢাকা: ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল, তবে আদালতের রায়ে তারা তাদের অধিকার ফিরে পেয়েছেন’, বলে জানালেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট বিদায় নিলেও ফ্যাসিজম বিদায় নেয়নি। ফ্যাসিজম নির্মূলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) আপিল বিভাগের রায়ে নিবন্ধন ফিরে পাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষ করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে যেখানে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভোটারদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান কোনো উদ্বেগ নেই, জামায়াত তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের রাজনীতি সমাজ এবং সার্বভৌমত্বের উপর কারও আধিপত্য মেনে নেবে না জামায়াত।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আজকের এই রায় প্রমাণ করেছে যে, দেশের বিচার ব্যবস্থা এখনো স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি—আমাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। আপিল বিভাগের রায়ে আমাদের সেই দাবি আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি, এই রায়ের মাধ্যমে একটি স্বাভাবিক, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে উঠবে। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি দেশের সংবিধান, আইন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আওতায় পরিচালিত হয় এবং ভবিষ্যতেও হবে।”
জামায়াত আমির সকল রাজনৈতিক দল ও মতের প্রতি সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, আমরা সবাই মিলে এই দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।”
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, নির্বাচন কমিশন যেন তাদের চেয়ারের মর্যাদা রক্ষা করে। তারা যেন কারো প্রতি বিশেষ সুবিধা না দেয়। সবাইকে যেন সমান দৃষ্টিতে দেখে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন থেকে বাতিল করে। এরপর থেকেই দলটি আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে জামাতের নিবন্ধন পুনরায় পুনর্বহাল করে রায় দেয়।