খুলনা: খুলনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ফুটবল খেলোয়াড়দের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে সামনে ও পরে পূর্ব রূপসা ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আট জন আহত হয়েছে। আহতদের প্রথমে খুলনা সদর হাসপাতালে পরবর্তীতে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বাকি চারজন গুরুত্বর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা হলেন- শাহাদাত খাঁন (১৫), সাম্য খাঁন (১৬), আদনান আপন (১৫), আলিফ আপন (১৫)। আহতরা সবাই শিক্ষার্থী।
হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ফাতেমা জাহান বেলী নামের এক অভিভাবক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৩ জুন মঙ্গলবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাজদিয়া শহীদ মনসুর স্মৃতি সংসদের ২০ জন ফুটবল খেলোয়াড় খুলনা জেলা ষ্টেডিয়ামে সুপার লীগ পূর্বে অংশ নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বের হয়। পথিমধ্যে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সাগর (২০), ফাহিম (১৯), আইয়ুব আলী (২১), আহাদ (১৯), তানভীর (১৮), নাইমসহ (২০) আরও অজ্ঞাত ২০/২৫ জন খেলা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে লাঠি সোটাসহ অতর্কীত হামলা চালায়। হামলায় আটজন ফুটবলার গুরুতর আহত হন। এ সময় সাম্য খানের হাতে থাকা একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং তিন হাজার ৩০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা সদর হাসপাতালে পরে রুপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তি আহত খেলোয়াড় অনিক জানান, প্রথমে কেএসএললের অনূর্ধ্ব ১৫ এর একটা খেলা হয়েছিল। খেলায় আমরা উত্তীর্ণ হয়ে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে খেলতে গিয়েছিলাম। খেলা শেষ করে আমরা যখন বাড়ির দিকে আসছিলাম। তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। সেখান থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ক্রীড়া সংগঠক অধ্যাপক আহমেদুল কবির চাইনিজ জানান, রূপসা সদর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ছেলেরা যাতে অবক্ষয়ের দিকে না যায়। খেলাধুলার জন্য মাঠে থাকে, এ জন্য চেষ্টা করি। মঙ্গলবার জেলা স্টেডিয়ামে কেএসএন ফিফটিন লীগ নামে একটা লীগ হয়। যেটা কাজদিয়া মাঠেও হয়েছিল। সেখানে কাজদিয়া শহীদ মনসুর স্মৃতির খেলোয়াড়রা বিজয়ী হয়। ওই খেলায় রহিমনগর ফুটবল একাডেমি অংশ নেন। সে খেলায় তারা কাজদিয়া শহীদ মনসুর স্মৃতির খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনেক অসজন্যমুলক আচরণ করে। এ সময় সিনিয়রদেরকেও অসম্মান করে। আমরা আমাদের প্লেয়ারদের বুঝিয়ে শান্ত করি। এ ঘটনার বিষয়টি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মোল্লা খাইরুল ইসলাম, খেলার আয়োজক কমিটির সেক্রেটারি তরিক ও ওদের কোচ সজিবকে বিষয়টি অবহিত করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে মাঠের ঘটনা নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন। মঙ্গলবার সুপার লীগের খেলা ছিল। সেখানে কাজদিয়া শহীদ মনসুর স্মৃতির খেলোয়াড়রা অংশ নেন। খেলা শেষে ফিরে আসার সময় রহিমনগর ফুটবল একাডেমির খেলোয়াররা আমাদের খেলোয়াড়দের বেধরক মারপিট করে রক্তাক্ত করে। পরে সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।
বুধবার (৪ জুন) সকালে রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।