ঢাকা: ক্ষমতায় গেলে ১৮০ দিনের কর্ম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কৃষি খাত গ্রামীণ উন্নয়নে কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড চালু করবে বিএনপি
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ পরিকল্পনার কথা জানান।
২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিএনপি।
কৃষি খাত ও গ্রামীণ উন্নয়নে বিএনপির নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্ক আমির খসরু জানান—
ক. কৃষকের নামে জমির পরিমাণ ও খতিয়ানসহ প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত ‘ফার্মার্স কার্ড’ চালু করা হবে। বর্গাচাষি ও ক্ষুদ্র কৃষকের জন্য কমপক্ষে একটি মৌসুমি ফসলের জন্য সম্পূর্ণ উৎপাদন খরচ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বহন করা হবে। এর ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষিজমি অনাবাদি থাকবে না। ভূমিহীনদের জন্যও কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
খ. কৃষকের কাছ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাষ্ট্র ন্যায্যমূল্যের ভিত্তিতে সরাসরি উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং দেশব্যাপী কোল্ড স্টোরেজ তৈরির কাজ শুরু হবে।
গ. কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে কৃষি খাতকে রফতানিমুখী গড়ে তোলা হবে।
ঘ. এলাকাভিত্তিক ডাটাবেস তৈরি করা হবে। কৃষকের জমির ও উৎপাদিত ফসলের পরিমাণের তথ্য-উপাত্ত নির্ণয় করে টার্গেটেড পলিসি সাপোর্ট দেওয়া হবে।
ঙ. বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য চাঁদাবাজি, মধ্যস্বত্বভোগী ও ফ্যাসিবাদের রেখে যাওয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
চ. দেশব্যাপী খাল খননের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করা হবে। বন্যা ও খরা থেকে কৃষকদের সুরক্ষিত রাখার কর্মসূচি নেওয়া হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো হবে।
জ. ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসার, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও জনশক্তি রফফনির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
শিল্প খাত নিয়েও দলের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানান— বিএনপি ক্ষমতায় গেলে-
ক. এক ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনোমির রোড ম্যাপে লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি।
খ. বিএনপি ২০৩৪ সালের মধ্যে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করতে চায়।
গ. জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি ট্যাক্সের লাগাম টেনে ধরতে চায়।
ঘ. শিল্প খাতের বিকাশে বিনিয়োগ বান্ধব নীতি গ্রহণ করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা হবে। যেসব বিনিয়োগে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, সেই ধরনের প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ঙ. বিনিয়োগ সহজ করতে, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে ব্যাংকিং সাপোর্ট নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ বাস্তবায়ন করা হবে।
চ. নতুন শিল্প সৃষ্টির জন্য কৃষি, মৎস্য ও অন্যান্য উৎপাদনমুখী খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
জ. পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকল সহ আওয়ামী দুঃশাসনে বন্ধ হয়ে যাওয়া মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে সেগুলো পুনরায় চালুর দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হবে।