ঢাকা: আগামী ২৮ জুন রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বুধবার (৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ এ ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে ইসলামী আন্দোলনের নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বিবৃতিতে ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে রাষ্ট্র নাগরিকদের প্রতিষ্ঠান হওয়ার বদলে স্বার্থান্বেষী মহলের গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিলের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে রাষ্ট্রকে জনতার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর সেজন্য দরকার সংস্কার। গোটা জাতি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সংস্কারে সরকারের সদিচ্ছার কথা শোনা গেলেও সংস্কার এখনো দৃশ্যমান হয় নাই। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংস্কার প্রশ্নের চেয়ে অন্যান্য বিষয় প্রধান্য পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরতন্ত্র জুলাই-আগস্টে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। কয়েক হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে, অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিগত ১৫ বছরে শতশত মানুষকে গুম করেছে। খুন করেছে। দেশের হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এমন সংঘবদ্ধ নৃশংস অপরাধী চক্রের বিচার হওয়া জনতার প্রাণের দাবি। বিচারের কাজ শুরু হলেও তার গতি শ্লথ; যা মানুষকে আশাহত করছে।’
ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজন করা হয় যাতে দেশ পরিচালনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো যায়। কিন্তু, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত পদ্ধতিগতভাবেই রাষ্ট্র পরিচালনায় উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এটা গণতন্ত্র, ইনসাফ ও যুক্তিবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
তিনি বলেন, ‘এই বাস্তবতায় ইসলামী আন্দোলন চায় রাষ্ট্রের মৌলিক ও প্রয়োজনীয় সংস্কার, পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। এই দাবিকে সামনে রেখে আগামী ২৮ জুন বিকেল ২টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী ময়দানে মহাসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।’
মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা মহাসমাবেশে দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য রাখবেন বলে জানান ইউনুস আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আশা করে, দেশের সকল প্রান্ত থেকে লাখো জনতা এই দাবিতে রাজধানীতে জড়ো হবে এবং সরকারের কাছে এই তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে দাবি জানাবে। একই সাথে দেশ-বিদেশের সকল ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে যে, বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার, বিচার ও পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ আছে।’