কক্সবাজার: ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বেড়েছে মাংস কাটার সরঞ্জাম কেনা। শানানো হচ্ছে দা-ছুরি-বটি-চাপাতি সহ ধারালো যন্ত্র। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কার করছে কামারশিল্পীরা। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নতুন অর্ডার। তবে এই মুহুর্তে কামার পল্লী ব্যস্ত হয়ে উঠলেও চূড়ান্তভাবে ভালো নেই বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প।
কক্সবাজার শহরের বড়বাজার পৌরসভা মার্কেট সংলগ্ন কামাল পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, টুংটাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে এই এলাকা। কেউ তৈরী করছেন নতুন সরঞ্জাম। আবার কেউ দিচ্ছে পুরাতন ছুরিতে শান। কয়লার চুরার আগুনের তাপে কামারের শরীর থেকে ঝরছে অবিরাম ঘাম। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও থেমে নেই কর্মব্যস্ততা। ভোর থেকে রাত অবদি চলছে এই কর্মযজ্ঞ। বাড়তি চাপ থাকায় এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অর্ডার। গ্রাহকদের ভালোটাই দিতে চান কামার শিল্পীরা।
রতন নামে এক কামার শিল্পী জানান, এখন তাদের পার হচ্ছে ব্যস্ত সময়। কাজের চাপে চাইলেই অর্ডার নিতে পারছেন না। তবে বছরের বাকি সময়গুলো এতটা ব্যস্ত থাকে না।

টুংটাং শব্দে মুখর কামার পল্লী।
সৌরভ নামে আরেক যুবক জানান, যতই ব্যস্ততা থাক সবচেয়ে ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ হিসেবে জানান, মার্কেটে মেশিনের তৈরী রেডিমেড ধারালো অস্ত্রসহ নানা কারণে তেমন কাজ পাওয়া যায় না। তাই ভালোটা দিয়ে গ্রাহকের মন জয় করতে চান। গ্রাহকরাও আগে থেকে নিয়ে নিচ্ছেন পরে না পাওয়ার ভয়ে।
শহরের বাহারছড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, পুরাতন দা-বটি শানাতে এসেছেন। সুবিধা পেলে নতুন একটি বড় দা কিনে নেবেন।
লিয়াকত হোসেন নামে এক গ্রাহক জানান, গত বছর দেরিতে আসায় দা-ছুরি শানাতে পারেননি। তাই আগে থেকে এসেছেন যেন সেই ঝামেলায় না পড়ে।
এদিকে, এই শিল্পের নানা প্রতিকূলতার কথা বলতে গিয়ে কর্মকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক পংকজ কর্মকার জানান, কাচাঁমালের বাড়তি দাম, কারিগরের অভাবসহ নানা প্রতিকূলতায় আগের মতো ভালো নেই কামার শিল্প। এই শিল্পকে বাচাঁতে সরকারের সহজ ঋণের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। নয়ত এই শিল্প এক সময় হারিয়ে যাবে।

শানানো হচ্ছে দা-ছুরি-বটি-চাপাতি সহ ধারালো যন্ত্র।