চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম বরাবরের মতো বিপুল উৎসবে মেতেছে। ভোরের আলো ফুটতেই মানুষ ছুটতে শুরু করেন বিভিন্ন ঈদগাহে, মসজিদে।
চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গনে ঈদুল আজহার প্রধান জামাতে ব্যাপক মুসল্লীর সমাগম হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় সেখানে মোট দু’দফা জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব সৈয়দ আলাউদ্দিন আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন মসজিদটির পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আহমদুল হক।

নামাজ আদায় করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ছবি: সারাবাংলা
জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চসিকের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি নেতা ও ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান, নগর বিএনপির সদস্য সচিব
নাজিমুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি এবং জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা।
সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর আরও ৯টি মসজিদে চসিকের ব্যবস্থাপনায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মসজিদগুলো হচ্ছে- লালদীঘির পাড় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শাহি জামে মসজিদ, হজরত শেখ ফরিদ (র.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরু বাজার জামে মসজিদ এবং সাগরিকা এলাকার মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে ঈদুল আজহার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া নগরীজুড়ে মসজিদে-মসজিদে এবং স্থানীয়দের উদ্যোগে বিভিন্ন ঈদগাহে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসব মসজিদে-ঈদগাহে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। নামাজে সবাই মিলে ত্যাগের মহিমায় আত্মশুদ্ধির ফরিয়াদ জানিয়েছেন সৃষ্টিকর্তার কাছে। পাশাপাশি বিশ্বশান্তির প্রার্থনাও ছিল মুসল্লিদের।

মসজিদে-ঈদগাহে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। ছবি: সারাবাংলা
নামাজ আদায়ের পর সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদুল আজহা আমাদের আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। ত্যাগের মহিমায় আমরা যেন পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে একটি সুন্দর, সৌহার্দ্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি। এ পবিত্র দিনে আমি আবারও চট্টগ্রামকে একটি গ্রিন ও ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।’
কোরবানিদাতাদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘পশু কোরবানির পর পানি ছিটিয়ে যেন সেই স্থানটা পরিস্কার করে ফেলা হয়। কারণ, রক্ত জমাট বেঁধে থাকলে সেটা ক্লিন করতে সমস্যা হয়। তাছাড়া সেটা পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। এছাড়া কোরবানির বর্জ্য, নাড়িভুঁড়ি যাতে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করে রাখা হয়, সেগুলো যাতে কোনোভাবেই নালায় ফেলা না হয়, সেই অনুরোধ করছি।’
এদিকে নামাজ শেষেই শুরু হয় পশু কোরবানি। নগরীর বিভিন্ন অলিগলি, রাস্তায়, মাঠে, বাসা-বাড়ির সামনে কোরবানি দেওয়া হচ্ছে।