চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে একেবারে সুশৃঙ্খল পরিবেশে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও কেনাবেচা চলছে। গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় চামড়া সংগ্রহে মাঠে ছিলেন গাউছিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবীরা। এছাড়া সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন মাদরাসায় লবণ সরবরাহের কারণে তারাও চামড়া সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করছেন। এর ফলে চামড়া কেনা-বেচায় শৃঙ্খলা ফিরেছে বলে মত আড়তদারদের।
তবে মৌসুমী সংগ্রহকারীরা এবারও নিজেদের ইচ্ছেমতো দামে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ রেছেন বলে আড়তদারেরা জানিয়েছেন। বড়, ছোট, মাঝারি গরুর চামড়া গড়পড়তা একই দামে কিনেছেন মৌসুমী সংগ্রহকারীরা। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছে ছোট গরুর চামড়ার চাহিদা কম। যার কারণে আড়তদারেরাও ছোট গরুর চামড়ার দাম দিচ্ছেন না মৌসুমী সংগ্রহকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী। এছাড়া সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দর নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু মৌসুমী সংগ্রহকারীরা সেই দর হিসেব করে লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া কিনেছেন। কিন্তু আড়তদারের কাছে এখন সেই দাম পাচ্ছেন না। এর ফলে মৌসুমী সংগ্রহকারীদের অনেকের ‘মাথায় হাত’ পড়ার উপক্রম হয়েছে।

ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এবার চট্টগ্রামে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি পশু কোরবানি হবে বলে সম্ভাব্য হিসেব দিয়েছিল। তাদের হিসেবে, জেলার ১৫ উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের ৪১ ওয়ার্ড মিলিয়ে চট্টগ্রামে গত বছর কোরবানি হয়েছিল ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি পশু।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার সুশৃঙ্খল পরিবেশে পশু কোরবানি হয়েছে চট্টগ্রামে। আমরা যে হিসেব দিয়েছিলাম, আশা করছি সেই পরিমাণই কোরবানি হয়েছে। তবে হিসেবটা জানাতে আরও দু’য়েকদিন সময় লাগবে।’
চামড়া সংগ্রহকারী ও আড়তদারেরা জানিয়েছেন, চামড়ার হিসেবে এবার কোরবানির পরিমাণ প্রায় গত বছরের মতোই হয়েছে। কিছু কম-বেশি হতে পারে।

ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
চট্টগ্রামে ছোট-বড় ২২৫টি আড়তে চামড়া সংরক্ষণ হয়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির তথ্য অনুযায়ী,গত বছর তারা তিন লাখ ৬০ হাজার ৯৫০টি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে তিন লাখের মতো ছিল গরুর চামড়া।
এবার কোরবানি কিছু বেশি হবে ধরে নিয়ে তারা চার থেকে সাড়ে চার লাখের মতো কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এর মধ্যে সাড়ে তিন লাখের মতো গরুর চামড়া হতে পারে বলে তাদের ধারণা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের সর্দার সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, চার থেকে সাড়ে চার লাখ চামড়ার মধ্যে তারা দেড় থেকে দুই লাখ চামড়া মহানগরী থেকে সংগ্রহ করা হবে বলে হিসেব করেছিলেন। বাকি চামড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে।

ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নগরীর আতুরার ডিপোর আড়তগুলোতে প্রায় দেড় লাখ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার কোরবানি গতবারের চেয়ে সামান্য কিছু কম হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে চামড়া আড়তে বিকেল পর্যন্ত দেড় লাখের মতো এসেছে। গত বছর কিংবা তার আগে মাগরিবের আযানের সময়ের মধ্যে অন্তঃত দেড়-দুই লাখ চামড়া এসে যেত। সে হিসেবে বলছি, এবার কোরবানি সামান্য কম হতে পারে। তবে আমাদের যে টার্গেট সেটা পূরণ হবে ইনশল্লাহ।’
কোরবানির পর চট্টগ্রাম নগরীতে প্রধান সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে চামড়ার স্তূপ নিয়ে মৌসুমী সংগ্রহকারীদের আড়তদারের জন্য অপেক্ষা এবারও দেখা গেছে। তবে সংখ্যায় সেটা অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক কম দেখা গেছে। প্রতিবছর নগরীর মুরাদপুর রেললাইনের পর থেকে আতুরার ডিপো পর্যন্ত অন্তঃত এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকায় নগরীর বিভিন্নস্থান এবং উপজেলা থেকে আসা শত, শত চামড়ার স্তূপের সারি দেখা যেত। এবার সেই চিত্র দেখা যায়নি।
আড়তদার আব্দুল কাদের সর্দার বলেন, ‘এবার সরকার একটা ভালো কাজ করেছে। তারা বিভিন্ন মাদরাসায় লবণ সরবরাহ করেছে। মাদরাসাগুলো তাদের এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ করে বা যেগুলো তারা দান হিসেবে পেয়েছে, সেগুলো আড়তে না এনে নিজেরাই সংগ্রহ করছে। পরে আমরা তাদের কাছ থেকে চামড়াগুলো কিনে নেব। গাউছিয়া কমিটি চামড়া সংগ্রহ করে তাদের নির্ধারিত বিভিন্নস্থানে নিয়ে সংরক্ষণ করছে। এজন্য এবার রাস্তাঘাটে চামড়া কম দেখা যাচ্ছে।’
চট্টগ্রামে কোরবানির কাঁচা চামড়ার বাজার প্রতিবছর ‘চার হাত চক্রে’ নিয়ন্ত্রণ হতো। কোরবানি দাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করতেন এলাকার উঠতি তরুণ-যুবকরা, যাদের মৌসুমি সংগ্রহকারী বলা হয়। তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে নিতেন বড়-মাঝারি মানের ব্যবসায়ীরা, যারা শুধু কোরবানির সময়ই চামড়া কিনতে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন এবং সেই চামড়া বিক্রি করেন আড়তদারের কাছে। সেই ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া বিক্রি করতেন আড়তদারের প্রতিনিধির কাছে। প্রতিনিধির কাছ থেকে চামড়া যেত আড়তদারের ডিপোতে।

ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
তবে সেই ‘চার হাত চক্র’ ২০২০ সাল থেকে ভেঙ্গে যায়। ২০১৯ সালে আড়তদার ও তাদের প্রতিনিধিরা ‘অস্বাভাবিক দরপতন’ ঘটিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনা বন্ধ রেখেছিলেন। এতে কাঁচা চামড়া সড়কে ফেলে দিয়ে তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল। ২০২০ সালে মৌসুমি সংগ্রহকারীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কমে নেমে আসে। এরপর তিন বছর কার্যত মাঠ থেকে ‘আউট’ হয়ে যান মৌসুমি সংগ্রহকারীরা।
এর ফলে কাঁচা চামড়ার বাজারের ওপর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন আড়তদার ও তাদের প্রতিনিধিরা। কিন্তু ২০২২ সালে এসে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ও কেনাবেচার নিয়ন্ত্রণ নেয় সুন্নী মতাদর্শে বিশ্বাসী সংগঠন আনজুমানে-রহমানিয়া-সুন্নীয়া ট্রাস্ট ও তাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গাউছিয়া কমিটি। প্রতিবছর তারা নগরী এবং উপজেলা থেকে মোট এক লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে, যা অব্যাহত আছে এবার চতুর্থ বছরেও।
গাউছিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘নগরী থেকে যেসব চামড়া সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেগুলো আমরা হাজী মোহাম্মদ আলীর কাছে বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। আগেরবছরও উনি আমাদের কাছ থেকে কিনেছিলেন। এবার শুধু নগরীরগুলো উনাকে দিচ্ছি। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে যেসব চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণের খরচ আরেকজন দিচ্ছেন। উত্তর চট্টগ্রামেরগুলো আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রাউজানের এক মাদরাসায় সংরক্ষণ করছি।’
প্রতিবছরের মতো এবারও কোরবানির পর শনিবার বেলা ১২টার পর থেকে নগরীর চৌমুহনী কর্ণফুলী বাজারের সামনে মৌসুমী সংগ্রহকারীদের আনা কাঁচা চামড়া জমা শুরু হয়। তাদের কাছ থেকে সেই চামড়া কিনে নিচ্ছেন যারা, তাদের মধ্যে প্রথাগত কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী, আবার মৌসুমীও আছে। তারা সেগুলো কিনে বিক্রির জন্য আড়তদারের অপেক্ষায় আছেন। আবার মৌসুমী সংগ্রহকারীদের কেউ কেউ নিজেরাই সরাসরি আড়তদারের কাছে বিক্রির জন্য অপেক্ষায় আছেন।
তবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ওই এলাকায় আড়তদার কিংবা তাদের কোনো প্রতিনিধির দেখা মেলেনি। সংগ্রহকারীদের অভিযোগ, দরপতন ঘটিয়ে নামমাত্র মূল্যে কেনার জন্য আড়তদারের ইচ্ছাকৃতভাবে কালক্ষেপণ করছেন। এভাবে গতবছরও অনেককে চামড়া ফেলে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন আড়তদারেরা।
তবে সেখানে মৌসুমী সংগ্রহকারীদের সঙ্গে কথা বলে যে যার যার মতো দামে কাঁচা চামড়া কেনার তথ্য পাওয়া গেল।
নগরীর দাইয়াপাড়া এলাকার ৭-৮ জন তরুণ, যাদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ বেকার, তারা ৪১টি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য কর্ণফুলী মার্কেটের সামনে আসেন। সবগুলো বড় গরুর চামড়া। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একজনও তাদের চামড়া কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
হতাশ তরুণ আবদুন নুর নয়ন সারাবাংলাকে বলেন, ‘৭০০-৮০০ টাকা করে প্রতিটি চামড়া কিনেছি। দাম ধরেছি এক হাজার টাকা। কেউ কিনতে আসছে না। কেউ দরদামও করছে না। গতবারও এনেছিলাম, ভালো রেট পেয়েছিলাম। আড়তদার আর এখানে যারা বেশি চামড়া কিনেছেন, তাদের মধ্যে সিন্ডিকেট আছে। তারা চাচ্ছে আমরা যাতে চামড়া বিক্রি করতে না পারি। তাহলে সামনেরবার থেকে আমরা আর চামড়া আনবো না, এটা তাদের কৌশল।’
সরকার নির্ধারিত দর হিসেবে তারা চামড়া কিনেছেন বলে জানালেন আবদুন নুর নয়ন।
নগরীর হালিশহরের ওয়াপদা মোড় থেকে দুই দোকানি ৯০টি বড় গরুর চামড়া নিয়ে বিক্রির জন্য এসেছেন। আড়তদারের দেখা না পেয়ে তারাও হতাশ। তাদের একজন মাহবুব সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবগুলো বড় গরুর চামড়া এনেছি। ৪০০, ৫০০, ৬০০ যেভাবে পেরেছি, সেই দামে কিনেছি। প্রতি চামড়ায় ২০০ টাকা লাভ পেলে বিক্রি করে দেব। কিন্তু কেউ তো কিনতে আসছে না। গতবার চামড়া ডাস্টবিনে ফেলে চলে গিয়েছিলাম। এবারও সেরকম হবে কী না জানি না।’
ফলমূল বিক্রেতা মো. নাছির কাঁচা চামড়া কেনায় ২৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পাড়া-মহল্লা থেকে কেনা চামড়া নিয়ে বসে আছেন বিক্রির আশায়।
নাছির সারাবাংলাকে বলেন, ‘বড় গরু যেগুলোর দাম পাঁচ-ছয় লাখ টাকা, সেগুলোর চামড়া ৩৫০ টাকায় কিনেছি। মাঝারি গরু, যেগুলোর দাম দুই লাখ-আড়াই লাখ টাকা, সেগুলোর চামড়া ২৫০-৩০০ টাকা করে কিনেছি। গতবার ২০ হাজার টাকার চামড়া কিনেছিলাম, পুরোটাই লস গেছে। এবার বিক্রি করতে পারবো কী না বুঝতে পারছি না। এখানে সব বড় বড় সিন্ডিকেট। আমাদের পুঁজি কম, সেজন্য আমাদের সমস্যা হয়।’
চৌমুহনী এলাকার বনেদি গোশত ব্যবসায়ী আলম সওদাগর। প্রতিবছর কোরবানিতে তিনি হাজারখানেক চামড়া কেনাবেচা করেন। এবারও বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৫০০ চামড়া সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কিনেছেন।

ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
আলম সওদাগর সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টা থেকে চামড়া কিনতে বসেছি। সকালে বড় গরুর চামড়া ৬০০-৭০০ টাকা দরে কিনেছি। বিকেলে দাম পড়ে গেছে। ৪০০-৪৫০ টাকা দরে কিনছি। মাঝারি গরুর চামড়া ৩০০-৪০০ টাকা দরে কিনেছি। ছোট গরুর চামড়া আমরা নিচ্ছি না। আড়তদারেরা নিষেধ করে দিয়েছেন। সেগুলোতে লবণ দেয়ার খরচ নাকি বেশি, পোষায় না।’
‘প্রতি পিসে ৫০-১০০ টাকা লাভ পেলে ছেড়ে দিতাম। কিন্তু আড়তদার আসছে না, কোনো লোকও পাঠাচ্ছে না। গতবার দুপুরের মধ্যে আড়তদার একদফা এসে চামড়া নিয়ে গেছে। এবার দাম ফেলে দেওয়ার জন্য কারসাজি করছে। এখানে তাদের এজেন্ট আছে। আমরা কত দামে চামড়া কিনছি, সেটা দেখছে। যখন চামড়া পচে যাবার উপক্রম হবে, তখন আসবে, কম দামে যেন কিনে নিতে পারে।’
আড়তদারদের কারসাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের সর্দার সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখানে সিন্ডিকেট কিংবা কারসাজির কোনো সুযোগ নেই। কারণ, চামড়া তো পচে যাবে। আমি না কিনলে আরেকজন তো কিনবে। আসলে সিজনাল যারা, তারা সরকার নির্ধারিত দর হিসেব করে চামড়া কিনছে। অথচ সরকার লবণ দেওয়ার পরে চামড়ার দর নির্ধারণ করেছে, কাঁচা চামড়ার দর হিসেব করেনি। এবার সরকার ১১৫০ টাকা প্রতি পিস লবণযুক্ত চামড়ার দর দিয়েছে। এটা অনেক মৌসুমী সংগ্রহকারী বুঝতে ভুল করেছেন।’

চামড়া সংগ্রহ। ছবি: শ্যামল নন্দী, সারাবাংলা
‘তারা যে দামে চামড়া কিনেছেন, সেই দামে তো আমরা কিনতে পারব না। কারণ, একটি চামড়ায় লবণ দিয়ে প্রসেসিং করে ঢাকায় ট্যানারি পর্যন্ত পাঠাতে আমাদের খরচ ৫০০ টাকা। প্রতি পিস যদি মৌসুমীদের কাছ থেকে আমি ৫০০-৬০০ টাকায় কিনি তাহলে সরকারি দর পার হয়ে যাচ্ছে। আমরা কী লস দিয়ে ব্যবসা করবো !’
ছোট গরুর চামড়া কেনায় নিষেধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিষেধ করিনি। ২০০ টাকার বেশি দরে ছোট গরুর চামড়া না কিনতে বলেছি। কারণ, সেটার প্রসেসিংয়েও ৫০০ টাকা খরচ আছে। ট্যানারি মালিক ছোট গরুর চামড়া কিনতে চান না। কিনলেও দর ভালো দিতে চান না। এজন্য বুঝেশুনে কিনতে বলেছি। এবার চট্টগ্রামে ছোট গরু কোরবানি বেশি হয়েছে। ছোট গরুর চামড়া না কিনলে তো আমরা চামড়াই পাবো না।’
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরু ও মহিষের কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অর্থাৎ সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিটি ১ হাজার ১৫০ টাকা।