ঢাকা: অন্তর্বর্তকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল সোমবার ( ৯ জুন) চারদিনের জন্য লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। চলতি সফরে ব্রিটিশ রাজপরিবারের আয়োজনে তাকে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ প্রদান করা হবে।
এদিকে মূলত পুরস্কার গ্রহণের উদ্দেশে যুক্তরাজ্য গেলেও প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর বাংলাদেশের জন্য খু্বই গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা বৃটিশ সরকার প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনাসহ দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলতি সফরে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের সঙ্গে তার কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ১২ জুন বৃটিশ রাজা কিং চার্লস হারমনি অ্যওয়ার্ড ড. ইউনূসের তুলে দেবেন। চারদিনের সফর শেষে আগামী ১৪ জুন দেশে ফিরবেন তিনি।
এর আগে বুধবার (৪ মে) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক অনেক গভীর ও জটিল, সেই বিবেচনায় আসন্ন সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
তিনি বলেন, চলতি সফরে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া বাকিংহাম প্যালেসে বৃটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সাথেও সাক্ষাত করবেন তিনি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক নেতা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাদের ফেরানোর বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে রুহুল আলম বলেন, আমাদের এই মুহূর্তে প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার। আমরা ব্যক্তি বিষয়ে যতটা বেশি পদক্ষেপ নিচ্ছি, এর চেয়ে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করাটা বেশি জরুরি বলে মনে হচ্ছে। আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সব দেশের সঙ্গে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে অবশ্যই যুক্তরাজ্যে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিষয়টি উপস্থাপন করব।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যেসব দেশে বাংলাদেশি অর্থপাচার করা হয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে এমএলএ (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স) আওতায় আমরা কাজ করছি। এসব বিষয়ে সময়ের স্বল্পতার কারণে সর্বোচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ে এত বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ থাকে না। সেজন্য সুর্নিদিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।
প্রধান উপদেষ্টার সফরে যুক্তরাজ্যের দিক থেকে দেশটি থেকে এয়ারবাস ক্রয়ের বিষয়ে আলোচনা হবে কি না- জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমি ঠিক জানি না। এ বিষয়টি নিয়ে কোথাও আলোচনা হবে কি হবে না এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে যুক্তরাজ্যের দিক থেকে কেউ আমাদের কাছে তুলে ধরবে কি না। এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে আমাদের কোনো পলিসি বা সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই।