নোয়াখালী: নোয়াখালী জেলায় ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করতে গিয়ে একদিনে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। কোরবানির পশু জবাইয়ের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক।
রোববার (৮ জুন) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজিব আহমেদ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মোট ১৯৯ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ডেলিভারি রোগী ছিলেন ১৫ জন। ও.পি.সি. পয়জনিংয়ের কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৮ জন রোগী। পাতলা পায়খানার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২ জন, আর সাধারণ মেডিসিন বিভাগে সেবা নিয়েছেন ২৬ জন।
তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ঈদের দিনে কসাই সেজে মাংস কাটতে গিয়ে আহত হয়েছেন মোট ১০০ জন। হাত কাটা, পা কাটা কিংবা ছুরি ফসকে গিয়ে অন্যান্যভাবে আহত হয়ে তারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন হাসপাতালে।
জেলা শহরের বাসিন্দা মিজান বলেন, আহতদের বেশিরভাগই তরুণ ও মধ্যবয়সী ব্যক্তি। যারা সাধারণত চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোরবানির দিন পরিবার বা পাড়ার সম্মান রক্ষার্থে কসাইয়ের ভূমিকা নিতে গিয়ে নিজেরাই পড়ে যান বিপদে। কারও হাতে ছুরি লেগেছে, কারও পা কেটে গেছে, কেউবা পশু জবাইয়ের সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন গুরুতরভাবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকরা
বলেন, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ছুরি-কাঁচির আঘাতে আহত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিছু রোগীর আঘাত গুরুতর। বেশিরভাগকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজিব আহমেদ বলেন, সামাজিক বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, অভিজ্ঞ কসাইয়ের অভাবে অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে নিজেরাই পশু জবাইয়ে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবছর ঈদুল আজহার দিন পশু জবাই করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বহু লোকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ কাজটি কেবল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বা অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাদেরই করা উচিত। অন্যথায় শুধু নিজেরই নয়, আশপাশের মানুষকেও ঝুঁকিতে ফেলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক লোককে সেবা দেওয়া হয়েছে।