ঢাকা: ছাত্রশিবিরকে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের উস্কানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
সোমবার (৯ জুন) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে শিবির নেতারা বলেন, ‘গতকাল (৮ জুন) ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের একটি বক্তব্যের ভিডিও গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। ওই বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে একের পর এক অযাচিত, ভিত্তিহীন এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন।
তার বক্তব্যের শব্দচয়ন ও উপস্থাপনার ভঙ্গিমায় বিগত ফ্যাসিস্টদের ঔদ্ধত্য ও দমননীতির প্রতিধ্বনি প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এই দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসংলগ্ন ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
নেতারা বলেন, ‘অতীতের ধারাবাহিকতায় জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে অনুকরণ করে শিক্ষার্থী নির্যাতন, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করছে। ছাত্রবান্ধব রাজনীতির পরিবর্তে ছাত্রদল চাঁদাবাজি, সহিংসতা, ধর্ষণসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
নিজেদের ব্যর্থতা ও অপকর্ম আড়াল করতেই বিগত ফ্যাসিস্টদের সুরে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান করছে। বিশেষ করে, ২০০২ সালে ৮ জুন ছাত্রদলের গুলিতে বুয়েটের ৯৯তম ব্যাচের মেধাবী ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি হত্যার বিষয়টি গতকাল সচেতন ছাত্রসমাজ আলোচনায় আনে, তখনই ছাত্রদল ফ্যাসিবাদী বয়ান হাজির করে ইস্যুটি আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনীতি-সচেতন নাগরিক তাদের এই অপচেষ্টায় বিভ্রান্ত হবেন না।’
নেতারা আরও বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজের ন্যায্য অধিকার আদায়, শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস পরিবেশ তৈরি ও জাতীয় সংকট নিরসনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে ছাত্র-জনতার আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
ধারাবাহিক গঠনমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থী, সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, শহীদ পরিবার এবং আহত ও গাজী ভাইদের সাথে নিয়ে দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে। যা ছাত্রসমাজের নিকট ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অতীতের ধারাবাহিকতায় কালচারাল ফ্যাসিস্টদের ফাঁদে পা দিয়ে ছাত্রদল আবারো ছাত্রশিবিরকে ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। পতিত ফ্যাসিস্ট যেমন তাদের ব্যর্থতা ও অপকর্ম ঢাকতে ছাত্রশিবির ও অন্যান্য বিরোধী সংগঠনের ওপর দায় চাপাত ও পরচর্চায় লিপ্ত হতো, ছাত্রদলও একই পদাঙ্ক অনুসরণ করছে।’
শিবির নেতারা ছাত্রদল সভাপতির প্রদত্ত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ছাত্রস্বার্থবিরোধী প্রতিহিংসামূলক অপরাজনীতি পরিহার করে গঠনমূলক ও সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
অন্যথায়, ছাত্রদলকেও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের মতো জনবিচ্ছিন্নতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার পরিণতি ভোগ করতে হবে উল্লেখ করেন।