Thursday 12 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বব্যাপী জাতীয়ভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রধান বিচারপতির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ জুন ২০২৫ ১২:৪২ | আপডেট: ১১ জুন ২০২৫ ২১:১১

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, গোটা বিশ্বে আঞ্চলিক ও জাতীয়ভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা জরুরি। এছাড়া সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য আমাদের কাজ আগের চেয়েও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বার্ষিক রুল অব ল’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে অনলাইনে দেওয়া বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ১২ জুন পর্যন্ত চলবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপতি বলেন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ সনদের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে নিহিত। ২০২৪ সালের ভবিষ্যতের চুক্তিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা জোরদার করা, সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ প্রদান করা এবং সর্বস্তরে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে জাতিসংঘকে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির ভিত্তি হিসেবে তাদের আইনের শাসন সমর্থনকে শক্তিশালী এবং উন্নত করতে হবে।

শক্তিশালী এবং স্বাধীন বিচার বিভাগ গড়ে তোলা এত কঠিন যে এই ধারণার মুখোমুখি হয়েও আমি এই মিশনকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় ইউএনডিপির ২৫তম বার্ষিক আইনের শাসন ও মানবাধিকার সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিতে পেরে নিজেকে সম্মানিত বোধ করেন প্রধান বিচারপতি।

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সংস্কার রোডম্যাপের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার পতনের পর নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু করে। ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবে অন্যায়, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণদের এক অভূতপূর্ব বিদ্রোহ এবং ন্যায়বিচারের এক স্পষ্ট প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিপ্লবের চূড়ান্ত মূল্য পরিশোধের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিচারিক সংস্কারের জন্য একটি রূপান্তরমূলক এজেন্ডার মাধ্যমে ন্যায়বিচার ও ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধারের আমার সংকল্পকে আরও দৃঢ় করেছে।

উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া ৪২ লাখের বেশি মামলার জট এবং বিচার বিভাগের প্রতি গভীরভাবে প্রোথিত অবিশ্বাস, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিকরণের কারণে ক্ষয়ে যাওয়া বিচার বিভাগ সংস্কারে আমাকে নিরুৎসাহিত করেনি। বরং যারা রাস্তায় নেমেছিল ন্যায়বিচারের জন্য, বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে সংস্কার রোডম্যাপ ঘোষণা করি। আমাদের সংস্কার রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তোলা।

আন্তর্জাতিক মান ও নিয়মাবলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সততা, ডিজিটাল রূপান্তর, জনকেন্দ্রিক পদ্ধতি এবং প্রচারণা সংক্রান্ত পরামর্শসহ প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়নে ইউএনডিপি আমাদের সহায়তা করে আসছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং সুইডেনসহ ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে ইউএনডিপি বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার উপর দেশব্যাপী বিচার বিভাগীয় আলোচনার আয়োজনে সহযোগিতা করেছে।

সারাবাংলা/আরএম/এমপি

আইনের শাসন বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর