ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে বুধবার (১১ জুন) এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ইরাকের মার্কিন দূতাবাস থেকে নাগরিকদের অঞ্চল ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে কারণ এটি বিপজ্জনক হতে পারে, দেখা যাক কী হয়।
ট্রাম্প আবারও জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না। তার ভাষায়, ‘আমরা তা হতে দেব না।’ তিনি বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন যাতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করে। তবে বুধবার তিনি স্বীকার করেন, এই লক্ষ্য অর্জনের ব্যাপারে তার আস্থা কমে যাচ্ছে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সামরিক হামলা চালায়, তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ঘাঁটিগুলোর ওপর জবাবি হামলা চালাবে।
কংগ্রেসীয় শুনানিতে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইরান এমন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে যা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির দিকে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার মধ্যে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
নির্দিষ্টভাবে কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট না করলেও, মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, বুধবার (১১ জুন) মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয় যে, ইসরায়েল ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতেই যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে কিছু মার্কিন নাগরিককে সরে যেতে পরামর্শ দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে, বিশেষ করে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন স্থাপনাগুলোর ওপর।
এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা গত কয়েক দিনে স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ রোববার ইরানের সঙ্গে ষষ্ঠ দফার আলোচনায় বসার পরিকল্পনা এখনও রেখেছেন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, ইরান দাবি করেছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, কেবলমাত্র বেসামরিক জ্বালানি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে।
মার্কিন দূতাবাস আংশিকভাবে খালি করার খবরে তেলের দাম প্রথমদিকে ৪ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়। কারণ, আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।