ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমানকে বেশি গুরুত্ব দিলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হবে- বলে মনে করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এ বিষয়ে দলীয় বক্তব্য তুলে ধরেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গুরুত্বপূর্ণ। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একটি বহুমাত্রিক রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, মনস্তাত্ত্বিক ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে একটি নির্দিষ্ট দলের প্রধানকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে দেশের পরিস্থিতি সেই দলের প্রতি ঝুঁকে যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা স্পষ্টত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করবে। রাষ্ট্রের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিরপেক্ষ আচরণ প্রত্যাশা করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।’’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘‘বিএনপি দেশের প্রধানতম দল। ফলে রাজনীতিতে তাদের মতামত ও তাদের দলীয় প্রধানের গুরুত্ব থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় বিএনপি ও তাদের দলীয় প্রধানের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে বিএনপির দলীয় প্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ আয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে তোড়জোর, সাক্ষাতে তার অনুমোদন এবং সেটা নিয়ে দেশের রাজনীতি ও মিডিয়ায় যেভাবে উচ্চমাত্রা চড়ানো হচ্ছে, তাতে দেশে রাজনীতিতে একক ব্যক্তিকেন্দ্রীকতার অনাকাঙ্ক্ষিত বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।’’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৪ বছর আগে। এর আগে পৌনে এক শত বছরের জাতিগত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আছে। ফলে দেশে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে জাতি আশা করেছিল। বিশেষ করে জুলাই অভ্যুত্থানের পরে একটি সুস্থ্, সমৃদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রত্যাশা করেছিল জাতি। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময় দেশে যে রাজনৈতিক কালচার বিরাজ করছে, তা দেশবাসীকে হতাশ করছে। দেশবাসী আশা করে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে দলীয় রাজনীতির বিশুদ্ধতা ও সংস্কারের আলাপ প্রাধান্য পাবে।’’
বিবৃতিতে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘‘বিএনপি যেভাবে চাঁদাবাজী ও সহিংসতা করছে, তা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভূমিকা পালনে তারেক রহমানকে প্রধান উপদেষ্টা পরামর্শ দেবেন বলে আমরা আশা করি। সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিএনপি যেভাবে দ্বিমত পোষণ করছে, তা নিয়েও কথা বলবেন এবং জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় বিএনপি আরও দায়বদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় স্থান পাবে বলে দেশবাসী আশা করছে।’’