ঢাকা: শেষ হলো সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের ‘মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম-২০২৫’। গত ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনব্যাপী বঙ্গপসাগরে সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যেকোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।
বাংলাদেশের জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে ‘মৎস আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম’ বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে আইএসপিআর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, দেশের সমুদ্রসীমার অভ্যন্তরে ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধির নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে দেশি-বিদেশি অবৈধ মৎস্য শিকারিদের অনুপ্রবেশ বন্ধে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় নৌবাহিনী এ সময় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চারটি যুদ্ধ জাহাজ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বোট বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় অঞ্চলে সার্বক্ষণিক টহলে নিয়োজিত ছিল।
এ ছাড়াও নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট-এর মাধ্যমে প্রতিদিন সুবিশাল বঙ্গোপসাগরে বেআইনি মৎস্য শিকার প্রতিহত করতে তীক্ষ্ণ নরজদারী করে নৌবাহিনী।
‘মংস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম-২০২৫’ চলাকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২৭৫টি অপারেশন পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে সর্বমোট ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ১১০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২ হাজার ৭৪৪টি বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জাল, ৫০৫ জন জেলেসহ ৫৭টি বোট এবং ১৬ হাজার ৩২৮ কেজি মাছ জব্দ করতে সক্ষম হয়। জব্দকৃত সরঞ্জামাদি ও মাছের আনুমানিক বাজার মূল্য ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। আটককৃত এসব অবৈধ জালসমূহ স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত মাছ স্থানীয় এতিম খানায় বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও মাছ ধরার নৌকা ও জেলেদের স্থানীয় প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, অভিযান পরিচালনাকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রজনন মৌসুমে ইলিশসহ সকল মাছ আহরণ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন ও গণসচেতনতা সৃষ্টিতে স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে। নৌবাহিনীর এই অভিযানের ফলে দেশের সমুদ্রসীমায় ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে মৎস সম্পদের প্রাচুর্য্য বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।