খুলনা: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র-জনতা অকাতরে জীবন দিয়েছে। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্তের ঋণের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। জুলাই-বিপ্লবের পরে এখন আমাদের আত্মশুদ্ধির সময় এসেছে। সে কথা মনে ধারণ করে সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বেতারের সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বলেন, ‘আমাদের এখন আরও সৎ হওয়া প্রয়োজন। সরকারের যে প্রতিষ্ঠানে আমরা কাজ করি সেটাকে যেন আমরা নিজের মনে করি। প্রতিষ্ঠানকে আপন ভাবতে পারলে আমরা অবশ্যই সৎ হবো এবং সৎভাবে দায়িত্বপালন করবো। কাজ করার স্পৃহাও সততার অংশ। কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল-সেটা এখন আমরা অকুতোভয়ে বলতে পারছি। আমাদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা থাকতে হবে। প্রান্তিক মানুষের মাঝে অপতথ্য বা মিথ্যাতথ্যের বিস্তার বন্ধে বেতারের বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।’
মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) মুনীর আহমদ, আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মুন্সি জালাল উদ্দিন, বেতারের পরিচালক মো. বশির উদ্দিন, খুলনা বেতারের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, আঞ্চলিক পরিচালক (দৈনন্দিন দায়িত্ব) মোঃ শামিম হোসেন, আঞ্চলিক বেতার প্রকৌশলী মো. মোতাকাব্বির করীম খান, বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর-সহ খুলনা বেতারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা খুলনা সার্কিট হাউজে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন খুলনার বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময়কালে তথ্য সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানের মান কাঙ্খিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এক সময় সরকারি গণমাধ্যম বিটিভি ও বেতারে কালজয়ী অনেক নাটক-সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হতো। দর্শক-শ্রোতাদের কাছে বিটিভি ও বেতারের সেই আবেদন ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ বেতারকে জনমূখী করতে হবে, জনমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে কেবল সরকারের দেওয়া অর্থের ওপর নির্ভর না করে শ্রোতানন্দিত অনুষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরখাত থেকে নিজস্ব আয়ের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের বোঝা না বানিয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা এখন সময়ের দাবি। আবার এ সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য আইসিটিসহ প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা আবশ্যক।’
এ সময় বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মুন্সি জালাল উদ্দিন, খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা সফরকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খুলনায় আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের জায়গা ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের খুলনা উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।