ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বৈঠককে ইতিবাচক বলে আখ্যায়িত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি’র জাতীয় নাগরিক পার্টির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। তবে একইসঙ্গে ‘জুলাই সনদ’ ও মৌলিক সংস্কার ইস্যুতে আলোচনার অনুপস্থিতিকে হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সাথে সকল রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য। তবে হতাশার বিষয়, বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, তেমনি গুরুত্ব পায়নি অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার।’

সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্ট।
তিনি মনে করেন, নির্বাচন শুধুমাত্র একটি পন্থা নয় এটি হতে হবে একটি দৃষ্টান্তমূলক রূপান্তরের অংশ, যা জুলাই সনদের মাধ্যমে নির্ধারিত সংস্কার, বিচার ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রক্রিয়ায় হতে হবে।
সারজিস আলম আরও লেখেন,’এই সরকার শুধুমাত্র নির্বাচন দেওয়ার জন্য গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং একটি গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা জনগণের অসংখ্য ত্যাগ ও প্রত্যাশার কাছে দায়বদ্ধ।’
তিনি জোর দেন, জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করাই উচিত। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের পূর্বে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আলোচনা করা, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব ভুলে যাওয়ার নামান্তর।’
সারজিস আলম দেশের স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, ‘ইতোমধ্যেই চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা এবং পেশিশক্তির প্রদর্শন দেখা যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিই এখন সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
সারজিস আলমের মতে, ‘নির্বাচনের মাস এপ্রিল হোক কিংবা ফেব্রুয়ারি তা বড় বিষয় নয়, মুখ্য বিষয় হলো নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদ অনুযায়ী কাঠামোগত রূপান্তর, বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করা।’
তিনি হুঁশিয়ার করেন, যদি এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে অভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি মাধ্যম হয়ে থাকবে। এই ঐতিহাসিক দায় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এড়াতে পারবে না।’
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকটি গত ১৩ জুন লন্ডনের পার্ক লেনের হোটেল ডোরচেস্টারে অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলমান রয়েছে।