টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের যমুনা সেতুর উপর পর পর কয়েকটি দুর্ঘটনায় ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৪/৫ টি যানবাহন বিকল হওয়ার কারণে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধীরগতির যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
যমুনা সেতু ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সেতু পূর্ব টোলপ্লাজা এলাকা থেকে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী যাত্রী ও চালকরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। পুলিশ ও যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের লোকজন যানজট নিরসনে কাজ করছে।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ ও যমুনা সেতু পূর্ব থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে মহাসড়কের সেতু পূর্ব থানা এলাকা, যমুনা সেতুর উপর পর পর বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। ঢাকা-টাঙ্গার মহাসড়কে ৪/৫ টি যানবাহন বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এরফলে মধ্য রাত থেকে শনিবার (১৪ জুন) ভোর পর্যন্ত কয়েক দফায় টোল আদায় বন্ধ রাখা হয় এবং দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলো সরাতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে মহাসড়কের যমুনা সেতু পূর্ব টোলপ্লাজা থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ২৩/২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানযাহনের দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। দুর্ঘটনা কবলিত ও বিকল গাড়িগুলো সরানো হলে ভোর থেকে টোল আদায় শুরু হয় ও ধীর গতিতে গাড়ি চলছে।
শনিবার (১৪ জুন) ভোর টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত যমুনা সেতু পূর্ব টোলপ্লাজা, গোল চত্বর, সেতু পূর্ব ইব্রাহীমাবাদ ও জোকারচর এলাকায়, ঘণ্টারপর পর যানজটে আটকা পড়েছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা। তীব্র গরমে দুর্ভোগে পড়েন তারা। মাঝে মধ্যে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। তবে, সকাল ৮ টার পর থেকে ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল শুরু করে।
গাইবান্ধা থেকে আসা ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নাবিল পরিবহনের চালক ওমর ফারুক বলেন, যমুনা সেতুর উপর ট্রাক-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণে জোকারচর এলাকায় কমপক্ষে দেড় ঘণ্টা ধরে যানজটের মধ্যে পড়ে রয়েছি। গাড়ি চলছেই না। এতে করে বাসে থাকা যাত্রীরা, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বেশি ভোগান্তি পড়েছেন।
নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একতা পরিবহনের যাত্রী পোশাককর্মী রিনা খাতুন জানান, এরকম ভোগান্তিতে বাড়ি ফেরার পথেও পড়েছিলাম, কর্মস্থলে যাওয়ার পথেও একই দশা। কয়েক ঘণ্টা ধরে সেতু এলাকায় যানজটে বসে আছি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, দুর্ঘটনার কারণে যানবাহনের ব্যাপক চাপ রয়েছে এবং মহাসড়কে গাড়ির দীর্ঘদিন লাইন থাকলেও ধীরগতিতে চলাচল করছে। দ্রুতই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
যমুনা সেতু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) মধ্য রাতে যমুনা সেতুর উপর পিকআপ-ট্রাকের সংঘর্ষের জন্য যানবাহনের জটলা লাগে।এ জন্য মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার ধীরগতি রয়েছে। পুলিশ কাজ করছে, খুব দ্রুতই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, যমুনা সেতুর উপর গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনা ও পর পর ৪/৫টি যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। সেগুলো সরাতে কয়েক দফায় সেতুর উভয় অংশে সাময়িক টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে সেগুলো দ্রুত সেতুর উপর থেকে অপসারণ করা হলে ভোর থেকে টোল আদায় চালু করা হয়। আশা করছি কিছু সময়ের মধ্যে যানজট কমে আসবে এবং স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করবে।