রাজবাড়ী: ঈদুল আজহার ছুটির শেষ দিনে দেশের অন্যতম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা ঘাট পার হতে পারছেন। এদিকে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা থ্রি হুইলার, প্রাইভেটকার, বাস, মাহেন্দ্র, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে দৌলতদিয়া এসে লঞ্চে পাটুরিয়াতে যাচ্ছেন। ৪-৫ মিনিট পরপর যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিযার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।
তবে প্রত্যেকটি লঞ্চ ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। লঞ্চ ঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার সদস্যরা কাজ করছেন। নৌপুলিশের পক্ষ থেকে হ্যান্ড মাইক দিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার খোকশা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আশরাফুল বলেন, ‘পদ্মা ব্রিজ হওয়ার আগে যে ভোগান্তি হতো সেটা এখন হয় না। তবে পথে কিছু ভোগান্তি হয়েছে। যাত্রী অনেক বেশি নিয়ে যানবাহনগুলো আসছে। ভাড়াও বেশি নিয়েছে, ১২০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা নিয়েছে।’
আরেক যাত্রী ফরিদপুরের বদরপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘পথে কোনো যানজট নেই। ঈদটাও অনেক ভালো কাটেছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করেছি। আগের মতো যাওয়া আসাতে এবার কোনো সমস্যা হয়নি।’
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘আমরা যাত্রিদের সবসময় হ্যান্ড মাইক দিয়ে সতর্ক করছি। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত যাত্রী না নেওয়ার জন্য বলেছি এবং যাত্রী উঠতেই দ্রুত লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের নৌপুলিশ সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ঘাট এলাকায় কাজ করছে। গরম অনেক, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি আইনের মধ্যে থেকে ঈদ-পরবর্তী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে।’
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ‘আজ সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ ভালই। গত কয়েকদিনের তুলনায় ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেড়েছে। ২০টি লঞ্চ চলাচল করায় যাত্রীরা এসেই পার হতে পারছে।’
লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশই ঈদ ফেরত যাত্রী। আমরা অনেক সতর্ক করছি যাত্রীদের। লঞ্চ ছাড়তে ছাড়তে দেখা যাই দৌড়ে ২০-৩০ জন উঠে পড়ে। আমরা এটা ঠেকাতে পারি না। তবে লঞ্চের যে ধারণ ক্ষমতা তার থেকে ১০-২০ জন যাত্রী বেশি যেতে পারে।

লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ছবি: সারাবাংলা
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আজ সকাল থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে দৌলতদিয়া প্রান্তে কোনো প্রকার যানজট বা ভোগান্তি নেই। বহরে থাকা ছোট-বড় ১৭টি ফেরি চলাচল করছে।’