রংপুর: রংপুরে রেজোয়ানা দিল আফরোজ নামে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী, ননদ ও ননদের স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৪ জুন) তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগের দিন শুক্রবার রাতে রেজোয়ানা দিল আফরোজ ঢাকা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় মেয়ে জামাই তাদের মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। শ্বশুর-শাশুড়ি আগুন না নিভিয়ে বরং দরজা বন্ধ করে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করে। থানায় হত্যা মামলা করতে এজাহার দিলেও পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়।
জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে রেজাউল করিমের মেয়ে রেজোয়ানা দিল আফরোজের বিয়ে হয় রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানার সরেয়ারতল এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রেজাউল করিমের সঙ্গে। বিয়ের সময় বরের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার উপহার দেওয়ার কথা ছিল। বিয়ের পর থেকে রেজোয়ানা যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতনের শিকার হন। ৫ জুন যৌতুকের জন্য স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা মারধর ও নির্যাতন করেন। ৮ জুন বিকেলে আসামিরা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। রেজোয়ানার দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
রেজাউল করিমের অভিযোগ, রেজোয়ানার জামাই আব্দুল করিম, ননদ পারভীন ও ননদের স্বামী ফখরুলকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু আধাঘণ্টা পর পুলিশ পারভীন ও তার স্বামী ফখরুলকে ছেড়ে দেয়। পরে থানা গেট থেকে তাদের আটক করে আবারও পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলার এজাহার দেওয়া হলেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস জানান, ঘটনার পর স্বামী, ননদ ও ননদের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হলেও এখন তদন্ত চলছে।