চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও দলটির নগর কমিটির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে ছবি থাকলে তাকে বিএনপির পদ থেকে বাদ দিতে হবে।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেইনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। চসিক মেয়রের পক্ষ থেকে এই পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়।
সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বার্তা দিয়েছেন, ৫ আগস্টের পরে যারা বিএনপিতে সক্রিয় হয়েছেন, সে ধরনের নেতাকর্মীরা যেন দলের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ না পায়। তারা মেম্বার হয়ত হতে পারবে। কিন্তু যারা ১৬টি বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, তারাই যাতে মুখ্য পদগুলো পায়।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের বার্তা আমরা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে চাই। উনি আরও একটি কথা বলেছেন, এরইমধ্যে যারা বিভিন্ন পদ পেয়েছেন, তাদের যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সাথে কোনো ছবি থাকে, তাদের সে পদ বাদ দিতে হবে। এ ধরনের কোনো প্রমাণ থাকলে আপনারা কেন্দ্রীয় দফতরে এবং এখানকার দফতরে জমা দেবেন। ১৬ বছরে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তারাই পদ পাবে। যারা ৫ আগস্টের পর এসে বিএনপিকে দ্বিধাবিভক্ত করতে চায়, তাদের ব্যপারে আমাদের কথা আছে। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বিএনপি।’
‘গত ১৭ বছর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে ‘গুম’ হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ শিকার হয়েছেন এবং অনেকে কারাবরণ করেছেন। অনেকে শত শত মামলার শিকার হয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কোর্টের বারান্দায় ছিলেন। আমরা দেখেছি গত ১৬ বছর অনেক নেতাকর্মী তাদের পরিবারকে আহার দিতে পারেননি। ঘরে থাকতে পারেনি কিন্তু তারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য গত ১৬টি বছর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মীও আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি। সে কর্মীরা হচ্ছে সাচ্চা কর্মী, নৈতিকতায় বিশ্বাসী।’
বিএনপি নেতা শাহাদাত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে তারা আস্থাশীল এবং তারা এখনো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব- এর অপেক্ষায় তারা আছে। শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার যে বার্তা এসেছে, তা ‘সবার জন্য একটা সুখের বার্তা’।
‘যে কথাটা আজকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, আমাদের দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, সমস্ত বিভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে গণতান্ত্রিক অধিকার আছে যেটা আমরা হারিয়েছি। আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে, জনাব তারেক রহমান সাহেব বারবার বলেছেন। আমরা কোনো বিভেদ রাষ্ট্রীয়ভাবে, জাতীয়ভাবে চাই না।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর কমিটির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য বদরুল আনোয়ার বক্তব্য দেন।