বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। দিবসটি উৎসর্গ করা হয়েছে বাবাদের ও বাবাসম ব্যক্তিত্বদের প্রতি সম্মান, ভালোবাসা এবং তাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি জানাতে। প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার পালিত হয় এই বিশেষ দিনটি, যা এ বছর পড়েছে ১৫ জুন।
বাবা দিবসের ইতিহাস জড়িয়ে আছে সোনোরা স্মার্ট ডড নামের এক নারীর নামে, যার বাবার নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই এই চিরন্তন ঐতিহ্যের সূচনা করেছিল।
বাবা দিবস প্রথম শুরু হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আমেরিকায়। ১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় একটি কয়লাখনির বিস্ফোরণে বহু বাবার মৃত্যু হয়। এরপর স্থানীয় একটি গির্জা তাঁদের স্মরণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যা অনেকের মতে প্রথম বাবা দিবস হলেও এটি নিয়মিত ছিল না।
প্রকৃতপক্ষে, বাবা দিবস প্রচলনের কৃতিত্ব দেয়া হয় সোনোরা স্মার্ট ডড নামক এক মহিলাকে, যিনি তার মা মারা যাওয়ার পর একা হাতে ছয় সন্তান বড় করা তার বাবা উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্টকে সম্মান জানাতে এই দিনের প্রস্তাব করেন।
মাত্র ৫ বছর বয়সে স্মার্ট ডডের মা মারা যান। এরপর তার বাবা পুরো পরিবারের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন। কঠোর কিন্তু মমতাময় এই পিতার প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই সোনোরা ১৯০৯ সালে মাদার’স ডে নিয়ে একটি উপদেশ শুনে মনে করেন, বাবাদেরও একটি দিবস প্রাপ্য।
তিনি প্রথমে ৫ জুন, নিজের বাবার জন্মদিনকেই বাবা দিবস হিসেবে প্রস্তাব করেন, কিন্তু প্রস্তুতির সময়সল্পতার কারণে ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথম সরকারি বাবা দিবস পালিত হয়। সেই দিনটি ছিল পিতৃত্ব নিয়ে ধর্মীয় ভাষণ ও পারিবারিক সম্মান জানানোর একটি দিন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাবা দিবসকে জাতীয় ছুটির মর্যাদা দিতে লড়াই করেন।
বাবা দিবস শুধু উপহার নয়, উপলব্ধি করার দিন। পিতৃত্ব মানে কেবল অর্থনৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং ভালোবাসা, নৈতিক শিক্ষা ও আবেগগত সহায়তাও। এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনে যারা ছায়ার মতো পাশে থেকেছেন, তাদের জন্য শ্রদ্ধা প্রকাশের এক নিঃশব্দ সুযোগ।