ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান টানটান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। একই সঙ্গে তিনি ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ চালায়, তবে পালটা জবাবে আমেরিকান সামরিক শক্তির ভয়াবহ রূপ দেখতে হবে।
তবে হুঁশিয়ারির পাশাপাশি ট্রাম্প একধাপ এগিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে একটি সমঝোতা করিয়ে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধ করতে পারি।’
গত শুক্রবার (১৪ জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘আজকের রাতে ইরানের উপর যে হামলা হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে যদি আমাদের ওপর হামলা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী তার সর্বশক্তি দিয়ে জবাব দেবে। এমন শক্তি দেখানো হবে, যা বিশ্ব আগে কখনও দেখেনি।”
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও জটিল আকার নিচ্ছে। ১২ জুন ইসরায়েল ইরানের উপর ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। দেশটির অভিযোগ, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। সেই কারণেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেই মূল লক্ষ্য বানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক সূত্র জানিয়েছে, ওই হামলায় প্রায় ৭০টি ফাইটার জেট অংশ নেয় এবং তেহরান থেকে শুরু করে পশ্চিম ইরান পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় ‘এয়ার সুপিরিয়রিটি’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ সময় ৪০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে ছিল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও পারমাণবিক গবেষণার সাথে জড়িত স্থাপনাগুলি। এতে ইরানের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েল-ইরানের সংঘাতের পূর্বাভাস হিসেবে ১১ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিক ও কর্মকর্তাদের ইরাক ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ধারণা করা হচ্ছিল, ইরান পালটা প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
উল্লেখ্য, অতীতেও ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক বিরোধে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে ট্রাম্প এমনই একটি ভূমিকা নেওয়ার দাবি করেছিলেন, যদিও ভারত পরে তা নাকচ করে দেয়।