পঞ্চগড়: জেলার তেঁতুলিয়ায় টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের সরকারি চাল জব্দ করেছে প্রশাসন। এ সময় গুদামঘর সিলগালাসহ একজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে জব্দের একদিন পর রোববার (১৫ জুন) দুপুরে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলায় গুদামের ম্যানেজার মো. সাদেকুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে শনিবার (১৪ জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে কয়েকশ’ বস্তা চাল, খালি বস্তা, মোড়ক পরিবর্তনের সরঞ্জামাদি, মোবাইল ফোন এবং সেলাই মেশিন জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে গুদামঘরে সিলগালা করা হয়।
অভিযানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরুর নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে অংশ নেন উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মো. রুবেল হোসেন এবং তেঁতুলিয়া মডেল থানার একটি টিম।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের আজিজ নগর এলাকার ফিরোজা বেগমের চাতাল ও গুদামঘর এবং তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা বাজারের মেসার্স সহিদুল রাইস এজেন্সির গুদামে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় সরকারি প্রকল্পের শতাধিক বস্তা চাল, খালি বস্তা ও চালের মোড়ক জব্দ করা হয়। স্থানীয়া বলছেন গুদামঘরগুলো ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসায়ী সহিদুল ইসলাম চাল, ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ব্যবসা করে আসছেন।
তবে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সহিদুল ইসলামের দাবি, তিনি বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প সভাপতিদের কাছ থেকে সরকারি বরাদ্দের চাল কিনে বৈধভাবে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করতেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে সংশ্লিষ্টরা চাল বিক্রি করে থাকেন এবং তিনিও বৈধভাবে কাগজপত্র দেখে সেগুলো কেনেন।
সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ চাল প্রকল্পের সভাপতি ও জনপ্রতিনিধিরা পাওয়ার পর বিক্রি করে তারা প্রকল্প বাস্তবায়নাহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেন। আর আমরা তাদের কাছ থেকে বৈধভাবে কিনে পরে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করি। আমাদের কাগজপত্র ও সরকারি লাইসেন্স রয়েছে।’
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মো. রুবেল হোসেন বলেন, ‘অভিযান চালিয়ে সরকারি চালসহ একজনকে আটক করা হয়। পরবর্তী সময়ে আটকসহ গুদামের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘অভিযানে সরকারি চালসহ বিপুল পরিমাণ খালি বস্তা ও মোড়ক পরিবর্তনের আলামত পাওয়া গেছে। গুদামের মালিক বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গুদামগুলো সিলগালা করা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, তেঁতুলিয়ায় বরাদ্দ টিআর-কাবিখাসহ বিভিন্ন বরাদ্দের চাল ও গম সিন্ডিকেট করে প্রভাব দেখিয়ে ও কম দামে কিনে পরে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে উপজেলা পিআইও অফিসের দুয়েকজন কর্মচারী জড়িত।