Monday 16 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ট্রাইব্যুনালে কিবরিয়ার কান্না
তুলে নিয়ে উপড়ে ফেলা হয় দুই চোখ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুন ২০২৫ ১৯:৩৯ | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ২০:৫৪

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ছাত্রদল নেতার গোলাম কিবরিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গুম করে চোখ উপড়ে ফেলার অভিযোগে সাবেক এমপি এমএ জাহেরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ছাত্রদল নেতার গোলাম কিবরিয়া।

সোমবার (১৬ জুন) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। কিবরিয়া কুমিল্লা মহানগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মল্লিকার দিঘী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম ও সালেহা বেগমের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে অধ্যয়নরত।

এদিন সাংবাদিকদের কাছে দুই চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনার বর্ণনা দেন কিবরিয়া। এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কিবরিয়া বলেন, ‘আর কোনো দিন আমি চোখ ফিরে পাব না। পৃথিবীর আলো দেখতে পাব না। তবে যারা আমার এ অবস্থার জন্য দায়ী তাদের বিচার হলে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারব।’ এ সময় তার সঙ্গে থাকা দুই ভাই ইয়াসিন আরাফাত ও মো. নেয়ামত রহমানও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তারা হলেন- কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের সাবেক এমপি এমএ জাহের, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব অপি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ বাপ্পি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. এমরান হোসেন, মো. পাবেল, মো. মোখলেছ, মো. রুবেল, আব্দুল জব্বার, মিরাজুল হক রিমন, অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক মো. শওকত, ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান, এসআই সুমন কুমার আদিত্য, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, মেহেদী হাসান খাঁন, মঞ্জুরুল বারী নয়নসহ আরও ২০-২৫ জন।

আবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে ট্রেনে কুমিল্লা স্টেশনে নেমে নিজ বাসা কালিয়াজুরি যাওয়ার উদ্দেশে রিকশায় রওনা দেন কিবরিয়া। পথে রাত সোয়া ১টায় এমপি জাহেরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে তার রিকশার গতিরোধ করা হয়। পরে তাকে অপহরণ করে জাহেরের মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রড দিয়ে শরীর ও মাথায় এলোপাতাড়ি নির্যাতন করা হয়।

এক পর্যায়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব অপি ছুরি দিয়ে কিবরিয়ার চোখ দুটি উপড়ে ফেলেন। চোখ উপড়ে ফেলার আগে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আটক দেখিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় পুলিশ। সেখান থেকে তাকে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর মিথ্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়।

পরবর্তী সময়ে যেন মামলা না করতে পারে, এজন্য আসামিদের যোগসাজশে কিবরিয়ার মায়ের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে সই নেয় পুলিশ। আসামিদের অত্যাচার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের ভয়ের কারণে চেষ্টা করেও মামলা করতে পারেননি এই ছাত্রদল নেতা।

সারাবাংলা/আরএম/পিটিএম

উপড়ে ফেলা কিবরিয়া ছাত্রদল নেতা টপ নিউজ দুই চোখ