ঢাকা: বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) পদ্ধতি নবজাতকদের জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানস্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সোমবার (১৬ জুন) শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ প্রকল্পকে একটি মহৎ ও সফল প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে শাহিনুল আলম বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা দেওয়া হয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করা, নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া। আরো একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো এই পদ্ধতিগুলোর ব্যয় অত্যন্ত কম, ক্ষেত্র বিশেষে ব্যয় নাই বললেই চলে, যা স্বাস্থ্যখাতে গবেষণার ক্ষেত্রেও একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।
সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মাঝেও দেশের স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে গেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কোভিড এর মতো মহামারী মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। আশাবাদী থেকে সকলে মিলে চেষ্টা করলে নবজাতকের মৃত্যু হারও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কমিয়ে আনা সম্ভব।’
সভায় জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে মা ও নবজাতকদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কাজ করার ফলে নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ১৬ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। তাই নবজাতকদের মৃত্যুহ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার মতামত দেন বিশেষজ্ঞবৃন্দ।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান। সভায় প্যানেল ডিসকাশন পর্ব সঞ্চালনা করেন বিএমইউ এর নিওন্যাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সোয়াপ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান।