পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মোস্তফা জামান নামে এক উদ্যোক্তা ড্রাগন ফল চাষে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। তার এই সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবকও ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উৎপাদন খরচের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি লাভ হওয়ায় ড্রাগন চাষিদের মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের কাংকুনী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা জামান প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করেন। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তিনি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি লাভবান হন। তার এমন সাফল্যে এখন স্বপ্ন দেখছেন আরও অনেকেই।
সরেজমিনে জানা গেছে, ২০১১ সালে মোস্তফা জামান শখের বশে ঢাকা থেকে দেশি জাতের বীজ এনে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। ফলন ভালো হওয়ায় ২০১৮ সালে বাড়ির পাশে ১ একর জমিতে ৪শ’ গাছ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেন।
বর্তমানে মোস্তফা জামানের বাগানে লাল, সাদা, হলুদ এবং গোলাপি রঙের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সুস্বাদু ড্রাগন ফল থোকায় থোকায় ঝুলছে। তিনি বাগান থেকেই প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৪শ’ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
তার বাগানের পরিচর্যাকর্মী জাভেদ মনোয়ার জানান, মাসিক বেতনে এই বাগানে কাজ করলেও বাগান পরিচর্যার মধ্যে আলাদা তৃপ্তি রয়েছে। তিনি নিজেও এখন অল্প জমিতে বাগান করেছেন। স্বপ্ন দেখছেন আরও বড় আকারে ড্রাগন চাষ করার।
স্থানীয় যুবক জহিরুল ইসলাম জানান, তিনিও এক একর জায়গা প্রস্তুত করেছেন ড্রাগন চাষের জন্য। যেহেতু খরচের তুলনায় লাভ বেশি, তাই আগ্রহী হয়েছেন বলে জানান।
একই গ্রামের কৃষক রফিক, আজাদ, জসিমসহ আরও অনেকে ড্রাগন চাষে এগিয়ে এসেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কেবল বালিতালী ইউনিয়নেই নয়, ড্রাগন চাষের সাফল্য ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার ধানখালী ও লালুয়া ইউনিয়নেও। সেসব জায়গা থেকে পরামর্শ পেতে অনেকেই আসছেন সফল চাষি মোস্তফা জামানের কাছে।
মোস্তফা জামান বলেন, ‘শখের বশে পাঁচটি ড্রাগন ফলের চারা দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। প্রথম থেকেই ভালো ফলন এবং অধিক লাভ পাওয়ায় তিনি বাগান সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে তিনি এক একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন ফলের চাষ করছেন। এই চাষে উৎপাদন খরচের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে বলে তিনি জানান। তার বাগান দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. নাহিদ হাসান বলেন, ড্রাগন চাষ বেশ লাভজনক। আগ্রহী ড্রাগন চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের এসএসিপি প্রকল্পের সহযোগিতায় এ বাগানটি করা হয়েছে। এরইমধ্যে কলাপাড়া উপজেলায় অনেক চাষি ড্রাগন চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ করা হয়েছে।