ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের অন্যতম প্রতিফলন হিসেবে বিশ্বব্যাপী দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। এই সংকট থেকে বাদ যাচ্ছে না বাংলাদেশের মেগাসিটি ঢাকা। দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে ছিল রাজধানীটি। তবে আজ (মঙ্গলবার) সকালের হালকা বৃষ্টিতে ঢাকাবাসীর জন্য বয়ে এনেছে কিছুটা স্বস্তির পরশ।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোরে ৫৫ পেয়ে ঢাকা এখন বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৬৬তম স্থানে রয়েছে। দূষণের মাত্রায় এটি ‘মাঝারি’ ক্যাটাগরিতে পড়ে, যা গত কয়েকদিনের তুলনায় বেশ ভালো অবস্থান।
এর বিপরীতে, ১৯৮ একিউআই স্কোর নিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই (১৭৫), তৃতীয় হ্যানয় (১৫৭), চতুর্থ কায়রো (১৫৬) এবং পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (১৫২ স্কোর)।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার দূষণ পরিস্থিতির সাময়িক উন্নতির পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে আবহাওয়ার পরিবর্তন, বিশেষ করে আজকের সকালের বৃষ্টিপাত। বৃষ্টির পানি বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ধুলা ও বিষাক্ত কণাগুলোকে নিচে নামিয়ে আনে, ফলে বাতাস কিছুটা পরিষ্কার হয়।
তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়। পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আহসান উল্লাহ বলেন, “বৃষ্টির পর স্বস্তির অনুভূতি আসলেও এটি ক্ষণিকের। শিল্পকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধুলা ও ইটভাটার ধোঁয়া—এই তিন প্রধান উৎস থেকে বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এ স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে না।”
একিউআই স্কোর ব্যাখ্যা:
০-৫০: ভালো (নিরাপদ)
৫১-১০০: মাঝারি (সহনীয়)
১০১-১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর
১৫১-২০০: অস্বাস্থ্যকর
২০১-৩০০: খুব অস্বাস্থ্যকর
৩০১-৪০০: বিপজ্জনক
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, নাগরিকদের যেন সচেতনতা বাড়ানো হয়। একইসঙ্গে পরিবেশবান্ধব নীতি বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, এ ধারা বজায় রাখতে শহরে গাছ লাগানো, সবুজ বাফার জোন তৈরি এবং ই-যানবাহন ব্যবহার আরও বাড়ানো জরুরি।