নোয়াখালী: বাংলাদেশে আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জেলা শহরগুলোতে করোনা পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও নোয়াখালীতে কিট ও মেশিন নষ্ট থাকার কারণে তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজের ল্যাব ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি।
জানা গেছে, দীর্ঘ তিন বছর পর দেশে ফের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা পরীক্ষা চালু হলেও নোয়াখালী করোনার নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। কারণ স্থানীয় হাসপাতালে পরীক্ষার কিট ও যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়েছে। করোনা মহামারির সময় জেলার নয়টি উপজেলার রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হতো নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে। তবে বর্তমানে সেখানে কিটের অভাবে কোনো ধরনের পরীক্ষা করা হচ্ছে না। যার ফলে নোয়াখালী জেলায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট না থাকায় করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ১০ হাজার কিট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে কিট হাতে পাব। কিট পেলে পরীক্ষা আবার চালু হবে।’
নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে স্থাপিত আরটিপিসিআর মেশিন দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এটি সারাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে টেকনিশিয়ান চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই সারাতে পারলে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।’
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড.ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যদি নির্দেশ দেওয়া হয় এবং কিট সরবরাহ করা হয়। তাহলে আমাদের পক্ষে পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব। উপাচার্য মহোদয় নির্দেশনা দিলেই আমরা কাজ করতে পারব।’
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘আমাদের ল্যাবরেটরিতে পূর্বে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। আমরা গতবার নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ থেকে একটি আরটিপিসিআর মেশিন সরবরাহ করেছি। যাতে এই অঞ্চলের মানুষ দ্রুত ও সহজে করোনা পরীক্ষা করতে পারেন।’
নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, ‘নোয়াখালীতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর কোন তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। সরকারি হাসপাতালগুলো কিটের চাহিদা দিয়েছে। সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা পেয়ে যাবেন।’
জেলায় র্যাপিড কিটের সংকট থাকায় করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে কিট আসলেই পরীক্ষা শুরু হবে।
এরইমধ্যে জেলার নয় উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ২-১ দিনের মধ্যে কিট আসবে। আসলে করোনা পরীক্ষা চালু হবে।