Saturday 12 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা বিদ্রোহ সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুন ২০২৫ ১৭:০০ | আপডেট: ১৮ জুন ২০২৫ ১৮:০৯

আরাকান আর্মি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শক্তি বাড়ালেও বিদ্রোহ সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। উল্টো এই সংঘাত মিয়ানমারের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্পর্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করবে। যার কারণে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আটকা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এরকম হয় বাংলাদেশে বসবাসকারী ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা আরও ম্লান হয়ে যাবে।

বুধবার (১৮ জুন) আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার: রোহিঙ্গা বিদ্রোহের ঝুঁকি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রোহিঙ্গা সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে। তবে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের এই যুদ্ধ সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ আরাকান আর্মি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ দখল করেছে। এরপর থেকে রোহিঙ্গা সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে সদস্য নিয়োগ বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার আরাকান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। যদিও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ নন সেস্ট অ্যাক্টর হিসেবে আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের যোগাযোগের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির অগ্রগতির পর রোহিঙ্গা সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হয়েছে। কক্সবাজারের শিবিরে বহু বছর ধরে সহিংস দ্বন্দ্বে জড়িত থাকা এসব গোষ্ঠী গত নভেম্বরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর শিবিরে সহিংসতা কমে এলেও সদস্য সংগ্রহ বেড়েছে। কারণ, আরাকান আর্মি রাখাইনের বৌদ্ধ জনগণের সমর্থন পায়, তাই রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় আহ্বানের মাধ্যমে সংঘাতে নামানো হচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী ও আরাকান আর্মি উভয়ের সঙ্গেই দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক বজায় রাখা বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা গোষ্ঠীদের ‘ঐক্যের’ উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। যদিও তাদের উদ্দেশ্য শিবিরগুলোতে সহিংসতা কমানো। তবে মনে হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করার একটি উপায় হিসেবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে। যদিও বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার ও আরাকান আর্মির মধ্যে শুরু হওয়া আলোচনার সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলছে।

ক্রাইসিস গ্রুপ পরামর্শ দিয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানো এবং রাখাইন রাজ্যে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য ও মানবিক সহায়তা বাড়াতে কাজ করা। এছাড়াও, ঢাকা ও তার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোরও উচিত শিবিরে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব নিয়ন্ত্রণে জোর প্রচেষ্টা চালানো এবং নাগরিক সমাজের নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করা।

আরাকান আর্মিরও উচিত রাখাইন রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে শাসনকাজ চালাতে পারে তা প্রমাণ করা এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করা। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র তাদের বেশির ভাগ বৈদেশিক সহায়তা কমিয়ে দিচ্ছে, তাই অন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের উচিত বাংলাদেশে আশ্রয়শিবিরে সহায়তা বাড়ানো।

সারাবাংলা/একে/পিটিএম

আরাকান আর্মি টপ নিউজ রোহিঙ্গা বিদ্রোহ সফল সম্ভাবনা কম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর