Wednesday 18 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুট মিলের নারী শ্রমিককে ভারতে পাচার, ২ সহকর্মীর যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুন ২০২৫ ২৩:০৩ | আপডেট: ১৮ জুন ২০২৫ ২৩:০৯

ফরিদপুর: ফরিদপুরে জুট মিলের একনারী শ্রমিককে (২২) সুন্দরবনে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে পতিতাপল্লীতে বিক্রির ঘটনায় দুই নারী সহকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বৈশাখালী গ্রামের মাকসুদা বিবি (৩৫) ও আটিরোপর এলাকার মর্জিনা ওরফে সোনালী (২৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৯ মে ভুক্তভোগী নারী শ্রমিকের মা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মানব পাচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। বাদী ও তার দুই মেয়ে ফরিদপুরের কানাইপুর করিম জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একই মিলে কাজ করতেন আসামি মাকসুদা বিবি। কাজের সুবাদে তাদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন মাকসুদা বিবি।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, সম্পর্কের সুবাদে আসামি মাকসুদা তার গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠানের কথা বলে যাওয়ার অনুরোধ করেন এবং সুন্দরবন ঘুরিয়ে দেখানোর প্রলোভন দেন। ২০১২ সালের ৮ মে তার বড় মেয়ে (২২) মাকসুদার সঙ্গে চলে যান। পরবর্তীতে তাকে সুন্দরবন দেখানোর কথা বলে ভারতে পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর একটি ভারতীয় নম্বর থেকে ফোন আসে এবং জানানো হয় যে, তার মেয়েকে পাচার করে কলকাতায় একটি পতিতাপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার পর একই বছরের ১৮ মে কলকাতা পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিজেদের জিম্মায় নেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী পরিষদের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনটির সদস্য এবং ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী শামসুন্নাহার নাইম।

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার নাইম জানান, কলকাতা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে সেখানকার একটি সেভহোমে রাখে। পরে সেভ হোমের কর্মকর্তা সুনন্দ বোস তাদের ঢাকা অফিসের সঙ্গে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। এরপর তারা বিস্তারিত জেনে মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। তাদের সহযোগিতায় মাকসুদা বিবিকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, দীর্ঘ ১৩ বছর আগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ মামলাটির রায় দেন বিচারক।

সারাবাংলা/এইচআই

জুট মিল ভারতে পাচার যাবজ্জীবন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর