Friday 20 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুসলিম বাজার ব্যবসায়ী সমিতিতে শতকোটি টাকার দুর্নীতি, দোষীদের গ্রেফতারের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২০ জুন ২০২৫ ২২:১৭ | আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ০০:০৬

দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ঢাকা: মুসলিম বাজার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড (রেজি. নম্বর -৫১)-এর সদস্যদের কষ্টে অর্জিত টাকা ও দোকান নিয়ে আওয়ামী দোসরদের চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে আজ এক প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে মুসলিম বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন থেকে সমবায় সদস্যরা অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে কাবিল হোসেন সরকার ও কদম আলী মাতবরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একটি চক্র প্রায় ৮০ থেকে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা ভুয়া উন্নয়ন কাজের নামে টাকা সরিয়েছেন, অবৈধভাবে বাজারের প্রায় ১২০টি দোকান দখল করে রেখেছেন এবং বর্তমান কমিটি অনৈতিকভাবে এই চক্রকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সমিতির প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং বিগত আট বছর ধরে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করা অর্থের (যা ৬ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) কোনো হিসাব নেই।

প্রধান বক্তা মো. বশির উদ্দিন বলেন, ‘বিগত শাসনামলে সরকারের দোসররা ভোট না করেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আর এই লুটপাটের নেতৃত্ব দেন তৎকালীন সভাপতি আলহাজ মো. কবির হোসেন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ কদম আলী মাদবর। এই লুটপাটে সঙ্গ দেন আলহাজ অধ্যাপক মো. দিলওয়ার হোসেন, আলহাজ মো. আব্দুর রহমান, মো. হাবিববুর রহমান হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার এসএম বাবলুর রহমান, ইফতেখারুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, সামছুল হক, নুরুল ইসলাম, লাল মিয়া মল্লিক ও সামছুন নাহার।”

তিনি আরও বলেন, ‘১৬ বছর আগে সাজ্জাদ-সেলিম পরিষদকে জোরপূর্বক বিদায় করার সময় সমিতির অ্যাকাউন্টে প্রায় ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা থাকার কথা ছিল, সেই টাকা কোথায় গেল তার সঠিক হিসাব দিতে হবে। ৯৯৪ জন সদস্য নিয়মিত ১২০ টাকা করে বছরে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৬০ টাকা ১৬ বছর যাবত জমা করে আসছেন। নতুন-পুরানো অনেকেই টাকা জমা দিয়েও দোকান পাননি, তাদের কোনো রসিদও দেওয়া হয়নি। কাগজে-কলমে ২৬০টি দোকানের কথা উল্লেখ থাকলেও মুসলিম বাজারে দোকান রয়েছে ৩৩৫টি, এর সঠিক যাচাই-বাছাই করতে হবে।

বক্তারা জানান, এমন অসংখ্য দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে তারা প্রতিবাদ সভা করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এই ‘দোসরদের’ দ্রুত গ্রেফতার করা না হয়, তবে সমবায় অফিস ঘেরাও এবং প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনসহ বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: সারাবাংলা

অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবদুর রব খান, মো. আবুল হাশেম মাস্টার, আশিক এলাহি, মেহরুন নেছা, মো. নুরুল হুদা, মো. মুসলিম উদ্দিন সরকার, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. মর্তুজা, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মাহমুদুল হাসান এবং মো. রঞ্জু আহম্মেদ।

তারা অভিযোগ করেন, ১২০টি দোকান বিক্রি করে প্রায় ১৮-২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া, বিগত ৮ বছরে সদস্যদের কাছ থেকে মাসে ২ হাজার টাকা করে মোট ৬ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করেও তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। সমবায় আইন অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৪৯(১)ঙ ধারায় তদন্ত শুরু হয়েছে, কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত মহল সেই তদন্ত প্রভাবিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

মানববন্ধন থেকে বক্তাদের মূল দাবিগুলো হলো- অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে, সদস্যদের আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে হবে, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং তদন্ত দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

সারাবাংলা/এফএন/এইচআই

বহুমুখী সমবায় সমিতি মুসলিম বাজার