ঢাকা: ঈদুল আজহার পরবর্তী সপ্তাহের বেশিরভাগ কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি হওয়ার প্রভাব পড়েছিল শেয়ারবাজারে। তবে এর মধ্যেই শুরু হয় ইরানের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ হামলা। অনৈতিক চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কালো ছায়া পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারেও। নির্বাচন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে গড়ে ওঠা আশা ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে হোঁচট খেল। সপ্তাহ জুড়ে সূচকের ওঠানামার পরও লেনদেন ও সূচক বেড়েছে। সূচকের ওঠানামার মধ্যে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৪৫০ কোটি ৫ লাখ টাকা। শনিবার (২১ জুন) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ছুটি পরবর্তী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৫.৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭০৯ পয়েন্ট। অপর তিনটি সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১৯.৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে এই সূচক ১ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭৮২ পয়েন্ট। এদিকে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৭ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ২০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১২ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৯১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫২ কোটি ৭ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। আগের সপ্তাহে সেখানে লেনদেন হয়েছিল ৯৬৪ কোটি ৫ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৬৬২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৪টির, দর কমেছে ১৫৯টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টির। যেখানে ১৮টির কোম্পানির কোনো লেনদেন হয়নি।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩১ পয়েন্ট। পুরো সপ্তাহে সার্বিক সূচক মোট শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৭০ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৪০৪ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ১ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ১১০ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়ে ৮৫২ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩০১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ২৯৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬২টির, দর কমেছে ১২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির শেয়ার ও ইউনিট দর।