মাত্র ৩৮ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল যুদ্ধ। দ্রুতগতির যুদ্ধে জাঞ্জিবারের প্রায় ৫০০ জন যোদ্ধা হতাহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, ব্রিটিশ বাহিনীর একজন নাবিক আহত হন। এ সংঘাত ইতিহাসের সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। ১৮৯৬ সালের ২৭ আগস্ট যুক্তরাজ্য ও জাঞ্জিবার সালতানাতের মধ্যে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মাত্র ৩৮ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে জাঞ্জিবারের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। ব্রিটিশ বাহিনী জয়লাভ করে। এত অল্প সময়ে যুদ্ধ শেষ হওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল। যে কারণে এই যুদ্ধকে পৃথিবীর স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধ বলা হয়।
১৮৯৬ সালের ২৫ আগস্ট ব্রিটিশদের পছন্দের সুলতান হামাদ বিন থুয়াইনি মারা গেলেন। ব্রিটিশরা চাইল হামুদ বিন মুহাম্মদকে নতুন সুলতান বানাতে। কারণ, হামুদ তাদের কথা শুনতেন। কিন্তু হামাদের ভাইপো খালিদ বিন বারঘাশ ব্রিটিশদের অনুমতি না নিয়েই নিজেকে সুলতান ঘোষণা করলেন। তিনি রাজপ্রাসাদও দখল করে নিলেন। ব্রিটিশরা তাকে প্রাসাদ ছেড়ে দিতে বললেও তিনি রাজি হলেন না। উলটো নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রাসাদের চারপাশে আরও সৈন্য জড়ো করতে লাগলেন।
১৮৯৬ সালের ২৭ আগস্ট সকালে ব্রিটিশ নৌবাহিনী খালিদ বিন বারঘাশের প্রাসাদে গোলাবর্ষণ শুরু করে। বোমাবর্ষণে খালিদের সৈন্যবাহিনী দ্রুত ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। রাজপ্রাসাদও ব্রিটিশদের গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হয়। মাত্র ৩৮ মিনিটের মধ্যে যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। খালিদ পালিয়ে যান। ব্রিটিশরা জাঞ্জিবারের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে, হামুদ বিন মুহাম্মদকে সুলতান হিসেবে নিযুক্ত করেন।
জাঞ্জিবার হলো ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ দেশ। এটি এখন তানজানিয়ার অংশ, যা আগে টাঙ্গানিয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৪৯৯ সাল থেকে জাঞ্জিবারের প্রধান দ্বীপ উনগুজা, যা জাঞ্জিবার নামেও পরিচিত। এটি পর্তুগীজদের দখলে ছিল। পরে, ১৬৯৮ সালে ওমানের সুলতান পর্তুগীজদের হটিয়ে এই দ্বীপে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৫৮ সালে সুলতান মাজিদ বিন-সাঈদ জাঞ্জিবারকে ওমান থেকে স্বাধীন ঘোষণা করেন। সে সময় ব্রিটিশরাও তার এই ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেয়। মাজিদের পরের সুলতানরা আস্তে আস্তে জাঞ্জিবারকে তাদের রাজধানী বানিয়ে তোলেন।
দীর্ঘসময় জাঞ্জিবারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার পর ১৮৮৬ সালের দিকে ব্রিটিশরা ধীরে ধীরে জাঞ্জিবার এবং সেখানকার সুলতানের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে।