Wednesday 25 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাহামুদুল হকের সংবাদ সম্মেলন
ওসিকে বরখাস্তসহ ইন্ধনদাতাদের শাস্তি দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুন ২০২৫ ১৯:০৩ | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ ০২:৫৮

সংবাদ সম্মেলনে বেরোবি শিক্ষক মাহামুদুল হক। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: রংপুরে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া মুদি দোকানি ছমেছ উদ্দিন হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার দুইদিন পর সংবাদ সম্মেলন করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক।

এ সময় তিনি হয়রানি বন্ধসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও নেপথ্যে থাকা জড়িতদের শনাক্তসহ দুটি দাবি জানান। দাবি দু’টি হলো- ৫ আগস্ট পরবর্তী হওয়া দুটি মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার। হাজিরহাট থানার ওসিকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় এনে তদন্ত কমিটি গঠন এবং ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পরিকল্পনায় তাকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে জানিয়ে মাহামুদুল হক বলেন, ‘আমি রংপুরে খুব বেশি দিনের মানুষ নই। হাজিরহাট থানা বা তার এলাকা এখনো আমি চিনি না। তবে থানার নামটা আমি কয়েকবার শুনেছি। এটা উত্তরে না দক্ষিণে, পূর্বে না পশ্চিমে আমি চিনি না। সেই এলাকায় একটা হত্যাকাণ্ড হয়েছে অথবা মৃত্যু হয়েছে কারও। সেই মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়। আমি আশ্চর্য হলাম হাজিরহাট থানার মামলায় পুলিশ আমাকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে তুলে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাই মামলা করাচ্ছে। হাজিরহাট থানায় যে মামলায় তার নামে দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছে। তাকে তিনি চিান না, এমনকি ঘটনাস্থল কিংবা হাজিরহাট থানা এলাকাও আমার অজানা। অথচ সেখানকার হত্যা মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৯ সালে আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। ২০২০ সালের দিকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে যুক্ত হই। তৎকালীন উপাচার্যের বিরুদ্ধে ৭৯০ পৃষ্ঠার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় গোল বৃত্তকে চারকোনা বানানোর বিষয়ে আমি একটি মামলা করি। ফলে আমার পক্ষে-বিপক্ষে কিছু গোষ্ঠী দাঁড়িয়ে যায়। আমি অধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমার কিছু বিপক্ষ গ্রুপ দাঁড়িয়েছে গেছে এই বিশ্ববিদ্যলেয়ে।’

গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা বলতে গিয়ে ‎‎অধ্যাপক মাহমুদুল হক বলেন, ‘ঘটনার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রাম শেষে আমি বাসায় যাই। তখন আমার ১৩ বছরের ছেলে ও আমি বাসায় ছিলাম। আমার পরিবার রাজশাহীতে ছিল। হঠাৎ সাদা পোশাক ও ইউনিফর্ম পরিহিত কিছু পুলিশ সদস্য ওসিসহ আমার বাসায় আসে। তারা আমাকে ছমেছ উদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে। আমি ওই মামলার সবশেষ ৫৪ নম্বর আসামি। আমাকে সরাসরি কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। আমি অবাক হয়ে যাই, কারণ মামলা ছিল হাজিরহাট থানায়, অথচ আমাকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। সেখানে কিছু কাগজপত্র তৈরি করা হয়। এরপর দ্রুত আমাকে আদালতে নিয়ে কয়েক সেকেন্ড শুনানি শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও অটোচালক মানিক হত্যা মামলায় আমাকে হয়রানি করা হয়। সেখানে আমি ছিলাম ১৯ নম্বর আসামি। কেন এসব হয়রানিমূলক মামলা করা হচ্ছে, তা আমি বুঝতে পেরেছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে অধিকার নিয়ে কথা বলেছি, মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। এসব কারণেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাই এসব মামলা করাচ্ছে এবং বাদীকে প্রভাবিত করছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে সরাতে, আমার পরিবারকে হেয় করতে এসব মামলা করা হয়েছে।’

এর আগে গত ১৯ জুন বিকেলে ছমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে রংপুরের বাসা থেকে মহানগর হাজিরহাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে তোলেন। আদালত তার জামিন মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। টানা তিন দিন জেলহাজতে থাকার পর গত ২২ জুন জামিনে মুক্ত হন শিক্ষক মাহমুদুল হক। একই দিনে হাজিরহাট থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আল মামুনকে বদলি করা হয়।

সারাবাংলা/পিটিএম

জামিন বেরোবি শিক্ষক মাহামুদুল হক সংবাদ সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর