ঢাকা:পিলখানা হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতার সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দিয়েছেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
তিনি বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক ব্যক্তি জড়িত। রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা কালক্ষেপণ করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সমর্থ হয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল সোয়া ১১টায় রাজধানীর বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসে (বিআরআইসিএম) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে পলাতক দুইজন রাজনৈতিক ব্যক্তি মির্জা আজম ও নানক লিখিতভাবে আমাদেরকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আরও ১৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। ১৪ জনের নামে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ বাইরে যারা পালিয়ে আছেন তাদের বিষয়ে দূতাবাসে চিটি দেওয়া হয়েছে। তারা যেন অন্তত লিখিত বা অনলাইনে সাক্ষ্য দেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা কালক্ষেপণ করায় এবং সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ড এবং অন্যান্য অপরাধ সংঘটন করতে সমর্থ হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই পিলখানার ভেতর থেকে আটকে পড়া অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বারবার অনুরোধ ও আকুতি করা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সময়মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি এবং অপরাধ সংঘটনের সময় তারা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ছিল। যার ফলে তারা বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড প্রতিহত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি।
জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বলেন, তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য প্রতীয়মান। গোয়েন্দা ব্যর্থতার স্বরূপ ও কারণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলাকালে কিছু গণমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার করার মাধ্যমে বিদ্রোহ উসকে দিয়েছে এবং একইসঙ্গে পরিকল্পিতভাবে সামরিক অফিসারদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত কারাগারের ভেতরে অবস্থান করা ২৫ জনের এবং কারামুক্ত ২৯ জন বিডিআর সদস্যর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আরও ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে।