চট্টগ্রাম ব্যুরো: সরকার পতনের দুদিন আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণে এক দোকান কর্মী নিহতের ঘটনায় কারাবন্দী সাবেক তিন সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশে দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বুধবার (২৫ জুন) এ আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মোস্তফা।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৩ আগস্ট নগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাটে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মো. শহিদুল ইসলাম শহিদ (৩৭)। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট তার ভাই নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক এজাহার বর্হিভূত ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তে ঘটনার সঙ্গে এ ১০ জনের সম্পৃক্ততা ও আন্দোলন দমাতে অর্থায়নের তথ্য পাওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে গ্রেফতার দেখানো প্রয়োজন।
তারা ১০ জন হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ ও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু ও রেখা আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বশর, মোহাম্মদ এমরান ও তার স্ত্রী জিনাত সোহানা চৌধুরী এবং আকবর আলী।
এদের মধ্যে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ছাড়া বাকিদের শুনানির সময় আদালতে হাজির করা হয়েছিল। বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা ফজলে করিমকে ভার্চুয়ালি শুনানিতে যুক্ত করা হয়।
আন্দোলনের সময় নিহত শহিদুল ইসলাম শহিদ হত্যা মামলায় তার ভাইয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শহিদ জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন। গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় দোকান থেকে বেরিয়ে বাসায় যাবার সময় দুষ্কৃতকারীদের গুলীবর্ষণে নিহত হন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার প্রবল গণআন্দোলনের মধ্যে গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরীর ষোলশহর এলাকায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসভবন এবং বহদ্দারহাট মোড় এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সেসময়কার মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে।
সেসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল, আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিবর্ষণে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ নিহত হয়েছেন।
তবে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বহদ্দারহাটে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে মেয়রের বাসায় হামলা ঠেকাতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছিলো। পুলিশ কোনো গুলি করেনি বলে দাবি করেছিল।