ঢাকা: ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ২০০১ সালের নির্বাচন অনুযায়ী সীমানা পুনর্বহাল এবং দ্রুত ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা সংক্রান্ত খসড়া প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি দলীয় বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিরা।
বুধবার (২৫ জুন) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানান তারা।
সিইসর সঙ্গে এ বৈঠক শেষে কুমিলার প্রতিনিধি বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, “১৯৮৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনী আসন ছিল, আপনারা সেভাবে পুনর্বহাল করেন- এটা আমাদের সার্বজনীন দাবি। আমরা কমিশনের কাছে খসড়া তালিকা প্রকাশের জন্য আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন আমাদের জানিয়েছে, তারা কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের আশা পূরণ হবে।”
এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলটি বৈঠক করেন নি বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, আমরা বিভিন্ন আসন থেকে প্রতিনিধিরা এসেছি। আমাদের সবার দাবি হচ্ছে ২০০১ সালের সীমানা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করা।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, “২০০১ সালে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, যেভাবে আমরা আসনভিত্তিক নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিলাম, এবারও ঠিক সেভাবে এলাকাভিত্তিক আসনগুলো যেন পুনর্বিন্যাস করা হয়। এ ব্যাপারে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার, সচিবের সাথে কথা বলেছি। তারাও আশ্বস্ত করেছেন অনৈতিকভাবে আসন বন্টন হবে না, জনগনের চাহিদা মোতাবেক আসন বিন্যাস করে উপহার দেবে।”
বিএনপি’র এ নেতা মুন্সিগঞ্জের প্রতিনিধি হিসেবে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জানান তিনি।
এর আগে, হোমনা ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-২ আসনটি আগের মতোই রাখার দাবীতে নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধন করে একদল লোক।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ৬ নং নিলখী ইউনিয়ন পরিষদ যুবদলের আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ জানান, ১৯৫৪ সাল থেকে হোমনা-মেঘনা এক আসনেই ছিল৷ কিন্তু ২০০৮ সালের তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এটি আলাদা করে। ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত সেভাবেই ভোট হয়। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে কুমিল্লা-২ আসনটি ফের আগে মতো করা হয়।
“অর্থাৎ হোমনা-মেঘনাবাসী পুনরায় এক আসনে চলে আসে। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই আবার ২০০৮ সালের অবস্থায় ফিরে যেতে চাই। তাই আমরা সেটা যাতে না করা হয় সে জন্য এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। কুমিল্লা-২ আসনে হোমনা-মেঘনা বহাল রাখার আবেদন করেছি।”
উল্লেখ্য, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সীমানা সংক্রান্ত সংশোধন অধ্যাদেশ হাতে পাওয়ার পর কাজও শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ৭৫টি আসনের ছয় শতাধিক আবেদনও জমা পড়েছে। সংসদীয় এলাকার জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ উপাত্ত না পাওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নি ইসি।
সবশেষ ১৯ জুন বৃহস্পতিবারের কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “সময়ের অভাবে এবং কিছু উপাত্ত এখনও বাকি থাকায় আলোচনাটা আজ আমরা এগিয়ে নিতে পারিনি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ সংসদীয় আসনের বিষয়টা সম্পন্ন হবে।”
১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের পর ২০০৮ সালে সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। দুই বছরের সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ব্যাপক সংস্কার আনা হয় নির্বাচনী সব আইনে। এ ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।