ঢাকা: কমনওয়েলথ চার্টারের মূল্যবোধগুলো সমাজে ছড়িয়ে দিতে এবং নিজ জীবনে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন বাংলাদেশের প্রায় ১০০ তরুণ প্রতিনিধি। ২৩ থেকে ২৪ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালায় তারা এই অঙ্গীকার করেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কমনওয়েলথ সচিবালয় এই কর্মশালার আয়োজন করে।
বুধবার (২৫ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমনওয়েলথ চার্টারে অন্তর্ভুক্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ সম্পর্কে তরুণদের মধ্যে গভীর ধারণা তৈরি করা এই ছিল কর্মশালার লক্ষ্য। মিডিয়া, সিভিল সোসাইটি, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ও শিক্ষাঙ্গনসহ বিভিন্ন পেশা ও পটভূমির তরুণরা এতে অংশ নেন। তারা ইতোমধ্যে নিজ নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন।
কেস স্টাডি ও দলগত আলোচনার মাধ্যমে তরুণরা জানতে পারেন কীভাবে এই মূল্যবোধগুলো বাংলাদেশি বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কিত। কর্মশালার শেষ দিন তারা এসব মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনাও করেন।
কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘কমনওয়েলথ চার্টার হলো বিশ্বের ৫৬টি দেশের ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মানুষের নৈতিক দিকনির্দেশনা। এই চার্টারের মূল্যবোধগুলো অবমূল্যায়িত হলে একটি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। তাই এই কর্মশালা শুধু সময়োপযোগী নয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তরুণরা এই চার্টার সম্পর্কে জানলে তারা জাতি গঠনে আরও দক্ষভাবে অবদান রাখতে পারবে।’
কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি-জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেস্কি বলেন, ‘আপনারা এরই মধ্যে চিন্তায়, উদ্যোগে ও কমিউনিটি কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এখন এই মূল্যবোধগুলোকে নিজের জীবনে ও নেতৃত্বে কাজে লাগান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের নেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সাফল্য হয়তো নিশ্চিত না, কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে ব্যর্থতা নিশ্চিত। তাই পিছিয়ে থাকবেন না, উঠে দাঁড়ান, আওয়াজ তুলুন, নেতৃত্ব দিন। এমন কিছু করুন, যাতে আপনারা ও আপনার দেশ গর্ব করতে পারে।’
বাংলাদেশ লিবার্টি অ্যান্ড রাইটস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা জায়েদ একরাম বলেন, ‘এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে আমি এই মূল্যবোধগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করতে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’
তিনি জানান, তার সংগঠনের তরুণদের সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য কাজ করবেন।
২০১৩ সালে গৃহীত কমনওয়েলথ চার্টার রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মূল্যবোধ ও নীতিমালাগুলোর একটি সম্মিলিত ঘোষণা। এতে সব সদস্যদেশ সম্মত হয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেস্কি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা জানান ও প্রধান বিচারপতি, উপদেষ্টা, কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।