ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ বলেছেন, পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন সহজতর করার জন্য বন্ড বাজার নীতি কাঠামো প্রণয়নে আগামী সপ্তাহে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। এই টাস্ক ফোর্সে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি ও এফআরসি থাকবে।
বুধবার (২৫ জুন) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার রাশেদ মকসুদ বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়ও বন্ড মার্কেটের পুঁজিবাজারে অনেক ভূমিকা রয়েছে। আমাদের পুঁজিবাজারে বন্ড থাকলেও লেনদেন খুবই কম। এটির লেনদেন বাড়াতে হবে। টাস্ক ফোর্স এ লক্ষ্য রেখে কাজ করবে।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুঁজিবাজারের স্তম্ভ মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আমাদের বাজারে এর প্রভাব খুবই কম। আমরা জানি, দেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কী অবস্থা। কীভাবে হয়েছে, কাদের জন্য হয়েছে- সেটাও সকলে জানি। টাস্ক ফোর্স এরই মধ্যে এসব বিষয়ে কাজ করছে। তারা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইস্যুতে কিছু প্রস্তাবনাও দিয়েছেন, যেন ভবিষ্যতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাজারের ইতিবাচিক প্রভাব বিস্তার করে।’
রাশেদ মাকসুদ বলেন, ‘আমরা একটা ভঙ্গুর প্রায় অর্থনীতি থেকে সামনের দিকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। এই অবস্থায় যে আমাদের নীতি নির্ধারকরা এতদূর টেনে এনেছেন এটাই মিরাকল। আমরা প্রতিনিয়ত বাজারের ব্যাপারে বসছি এবং আলোচনা করছি। বাজারের সূচক ওঠানো-নামানো আমাদের কাজ না। বাজারের পলিসি নিয়ে কাজ করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। জনগণের কাছে আমরা সংস্কারের একটা ফুটপ্রিন্ট রেখে যেতে চাই, যেন আগামী সরকার তা দেখতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্সের যে আরও বড় কাজটা ছিল, সেটা সুশাসন। সেটার রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি। যদি আমরা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আরও শক্তিশালী পুঁজিবাজার উপহার দিতে পারব। ১০ কোটি টাকার ক্যাপিটালের কোম্পানি ২৮৫ কোটি টাকার ক্যাপিটাল দেখিয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা পথে বসে গেছে। এটা দেখার কাজ অডিটরদের। বিএসইসি ছাড়াও আরও চারটা প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে অন্যতম আইডিআরএ ও এফআরসি। আইডিআরএ বেশকিছু রেগুলেশন রিভাইস করছে। কীভাবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হয়।’
অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যেদিনই ডিএসইতে কথা বলি সেদিনই দেখি ইন্ডেক্স ৩০ থেকে ৪০ পয়েন্ট নেই। তবে আজ দেখতে পাচ্ছি ইন্ডেক্স পজিটিভ আছে। এই সময়ে সুদের হার বেশি হওয়াতে সবাই মার্কেট থেকে টাকা সরিয়ে ট্রেজারি মার্কেটে যাচ্ছে এবং বন্ড মার্কেটে যাচ্ছে। পাকিস্তানে টোটাল ট্রেডের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে সরকারি সিকিউরিটিজ।’
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিডিবিএল চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী, এফআইসিসির সভাপতি জাভেদ আখতার। সভাপতি পরিচালনা করেন ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম।