Wednesday 25 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘২০২৬ সালের জুলাই থেকে পূর্ণোদ্যমে চালু হবে পায়রা বন্দর’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ জুন ২০২৫ ০০:০৫

মতবিনিময় সভা

পটুয়াখালী: পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল বলেছেন, ২০২৬ সালের জুলাই মাস থেকে পায়রা বন্দর পূর্ণোদ্যমে তার অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করবে। ১৯টি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরিত হবে।

বুধবার (২৫ জুন) সকালে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বর্তমানে পায়রা বন্দরের চ্যানেলের গভীরতা সাড়ে ছয় মিটারের বেশি, যেখানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পণ্যবাহী মাদার ভেসেল ভিড়তে পারে। রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল জানান, মেইনটেন্যান্স ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এর গভীরতা সাড়ে ১০ মিটার পর্যন্ত উন্নীত করা গেলে এটি অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের চেয়ে গভীর হবে এবং বড় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। এজন্য দুবছরের একটি প্রকল্প নেওয়া হবে এবং এর মধ্যেই দুটো ড্রেজার ক্রয় করে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ড্রেজিং করে খরচ কমানো হবে। তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা হ্যান্ডলিং করেই ড্রেজিংয়ের খরচ মেটানো সম্ভব হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় রাজধানীর সঙ্গে পায়রা বন্দরের নৌ ও সড়ক পথের দূরত্ব কম হওয়ায় সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী নদী পথে ২৪/৭ কন্টেইনার পরিবহণের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ৬ লেন সড়ক নির্মিত হলে যানজটবিহীন সড়ক পথে কার্গো পরিবহণের সুবিধা সৃষ্টি হবে।’

মাসুদ ইকবাল আরও বলেন, ‘আধুনিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ দেশের একক দীর্ঘতম ৬৫০ মিটার জেটি, ৩ লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০ হাজার বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস শেড, এবং বন্দরের অভ্যন্তরে চ্যানেলে নিরাপদ অবস্থানে একই সময়ে ১৫টি পর্যন্ত বাণিজ্যিক জাহাজের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা থাকায় এই বন্দরে জটবিহীন বার্থিং/আন-বার্থিং সুবিধাসহ দ্রুততম সময়ে পণ্য লোডিং/আনলোডিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।’

তিনি জানান, বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালের অপারেশন শুরুর আগেই অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও পায়রা বন্দর এরই মধ্যে ৫২৯টি বৈদেশিক জাহাজ ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ নিরাপদে হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হয়েছে। এখান থেকে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বন্দরকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে শিল্প খাতে বড় বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরও বহু বিনিয়োগ অপেক্ষমান আছে। বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে সচল হওয়ার পর যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, তা দক্ষিণাঞ্চলের একটি তুলনামূলক অনগ্রসর জনপদকে সমৃদ্ধ করা তথা দেশের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে। তিনি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দরের অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

সভায় বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ নিয়ে বক্তব্য দেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেন পায়রা বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া মোংলা, পায়রা, পানগাঁও এবং ল্যান্ড পোর্ট পরিচালক সুমন হাওলাদার, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পরিচালক মামুনুর রশিদ, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় বন্দরের কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন দফতর/সংস্থার প্রতিনিধিরা, ব্যবসায়ী নেতারা, বন্দর ব্যবহারকারী-অংশীজন এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা বন্দরের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে সেগুলো থেকে উত্তরণের দাবি জানান।

সারাবাংলা/এইচআই

এডমিরাল মাসুদ ইকবাল পটুয়াখালী পায়রা বন্দর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর